রাজশাহী জেলার মানচিত্র

সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে রাজশাহীর বাগমারায় বিএনপির ২০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বাগমারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

তবে মামলার আসামিদের দাবি, আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে ভীতি সৃষ্টির জন্য পুলিশ এই গায়েবি মামলা করেছে। আর পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ছয়টি অবিস্ফোরিত ককটেল, চারটি বাঁশের লাঠি, ইটের টুকরা ও চারটি পানির বোতল জব্দ করেছে। এরপর মামলা করা হয়েছে।

রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের কেউ ঘটনা সর্ম্পকে কিছুই জানেন না। মামলার এক দিন পর এ বিষয়ে জানতে পেরেছেন তাঁরা। রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে নেতা-কর্মীরা যাতে না আসতে পারেন, এ জন্য গায়েবি মামলা করা হয়েছে। এরপরও সমাবেশ সফল হবে।

তবে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, তাঁরা প্রথমে গোডাউন মোড়ে সমাবেশের চেষ্টা করেছিলেন, সেখানে সুবিধা করতে না পেরে নাজিরপুরে গিয়ে সমাবেশ করেছেন। পুলিশ প্রকৃত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা করেছে। এটা কোনো গায়েবি মামলা নয়।

মামলায় ভবানীগঞ্জ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামানসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা উপজেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

মামলার প্রধান সাক্ষী গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু মোল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি উপজেলা সদর থেকে বাড়িতে ফেরার পথে শিবজাইট এলাকায় হইচই শুনতে পান। তবে সেখানে গিয়ে পানির বোতল, লাল স্কচটেপ মোড়ানো কয়েকটি কৌটা দেখতে পান। তবে তাঁকে যে মামলার সাক্ষী করা হয়েছে, তা তিনি জানেন না।

মামলার বাদী এসআই রেজাউল ইসলাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে পুলিশ জানতে পারে যে নাশকতা সৃষ্টির জন্য ভবানীগঞ্জ পৌরসভার নাজিরপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিএনপির নেতা–কর্মীরা জমায়েত হয়েছেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে সেখানে অভিযানে যান তিনি। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীরা পালিয়ে যান। সেখান থেকে পুলিশ ককটেল, লাঠি ও ইটের টুকরা উদ্ধার করে। তাঁরা স্থানীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সরকারি স্থাপনায় হামলা করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছিলেন। প্রাথমিকভাবে সাতজনের নাম–পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকি আসামিদের পরিচয় সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

মামলার প্রধান আসামি আক্তারুজ্জামান দাবি করেন, তিনি মামলা হওয়ার পর বিষয়টি জানতে পেরেছেন। সেখানে ওই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে।