সালথায় আওয়ামী লীগ-স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২০

ফরিদপুরের সালথায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। যদুনন্দী বাজারে সংঘর্ষের পর দোকানপাট ছিল বন্ধ
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের যদুনন্দী বাজারে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শটগানের ২৫টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। পরে বেশ কিছু দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

সালথা উপজেলা ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা ও সালথা) সংসদীয় আসনের অধীন। দলীয় নেতা-কর্মীরা বলেন, এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া।

স্থানীয় লোকজন বলেন, গত শনিবার যদুনন্দী বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল হোসেন মিয়ার পক্ষে একটি বৈঠক হয়। সেখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহদাব আকবরকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন জামাল হোসেন মিয়ার অনুসারী মো. কাইয়ুম মোল্লা। এর পর থেকে বাজারে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

এ উত্তেজনার মধ্যে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল হোসেন মিয়ার অনুসারীর সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহদাব আকবরের অনুসারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রব মোল্লা ও উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি খন্দকার সাজ্জাদ হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বেলা ১১টার দিকে উভয় পক্ষের ৫০০ থেকে ৬০০ লোক ঢাল, সুরকি, কাতরাসহ বিভিন্ন দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। দফায় দফায় চলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। খবর পেয়ে পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। সংঘর্ষে পুলিশের ৫ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর অনুসারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রব মোল্লা বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই সকালে যদুনন্দী নবকাম কলেজের ভেতর দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেন কাইয়ুম মোল্লা ও তাঁর লোকজন। পরে তাঁদের পক্ষের লোকদের ওপর হামলা করলে সংঘর্ষ বাধে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী অনুসারী কাইয়ুম মোল্লা বলেন, সকাল ছয়টায় তাঁদের সমর্থক টুকু ও জাহাঙ্গীরের বাড়িতে গিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য চাপ দেন ও ভয়ভীতি দেখান আবদুর রব মোল্লা ও খন্দকার সাজ্জাদ। পরে জাহাঙ্গীর যদুনন্দী বাজারে এলে তাঁকে মারধর করেন খন্দকার সাজ্জাদ। এ নিয়ে পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।

সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পরিমল কুমার বিশ্বাস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শটগানের ২৫টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে এসআই শরিফুল ইসলাম, আবু রায়হান নূর, আবদুল হালিম, কনস্টেবল রাজু হোসাইন ও বাবু মিয়া আহত হয়েছেন। এখন ওই এলাকার পরিবেশ শান্ত। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আটটি ঢাল ও কয়েকটি লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে।