‘সাতকানিয়ায় এখন ১০-১২ জন এমপি’

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবেছবি–সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ এনেছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। পাশাপাশি নদভী ওই নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী–সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সংবাদ সম্মেলনে নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত নদভী এসব অভিযোগ করেন।

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে পরাজিত হওয়ার প্রায় আড়াই মাস পর সংবাদ সম্মেলন করেন দুই মেয়াদে দায়িত্বে থাকা এই সাবেক সংসদ সদস্য।

সংবাদ সম্মেলনে নদভী বলেন, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার অপরাধে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর বর্তমান সংসদ সদস্যের প্রত্যক্ষ মদদে হামলা এবং বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এলাকায় একাধিক খুনখারাবি, চাঁদাবাজি ও ধারাবাহিক চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটছে।

নদভী আরও বলেন, ‘নির্বাচনের পর এলাকায় ছয়জন খুন হয়েছে। আগের ১০ বছরে একজনও খুন হয়নি। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে কী ঘটে জানি না। উনি নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থী। আমার মনে হয় এলাকায় স্বতন্ত্র নেই, জামায়াত আছে। জামায়াতের সমস্ত ক্যাডার এখন মাঠে।’

তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর সাতকানিয়া-লোহাগাড়া ১০ বছর শান্তিপূর্ণ ছিল বলে দাবি করেন নদভী।

নদভী বলেন, ‘হয়তো তাদের (জামায়াত) সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে ভোটে আমাকে ঠেকালে, উপজেলার ভোটে তাদের দেওয়া হবে। নইলে এখন উপজেলা নির্বাচন ঘিরে জামায়াতকে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে কেন? আমার সময়ে তো জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা এলাকায় ছিল না। এখন হাজার হাজার ক্যাডার সবাই মাঠে। তিনি (এম এ মোতালেব) আওয়ামী লীগের না, স্বতন্ত্র এমপি। তাঁর ছোট ভাই মাওলানা মাহমুদুল হক জামায়াতের সিনিয়র নেতা।’

নদভী বলেন, ‘সাতকানিয়ায় এখন এমপি একজন না, ১০-১২ জন। সবচেয়ে শক্তিশালী এমপি আ ন ম মিনহাজুর রহমান (দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য)।’

সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বিরুদ্ধে কয়েক দিন আগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনের বিষয়েও কথা বলেন নদভী। তিনি বলেন, দুই দিন আগেও দেওদিঘী বাজারে ইফতার বিতরণ ও মাদকবিরোধী সমাবেশের কথা বলে লোকজন আনা হয়। পরে লোকজন গিয়ে দেখে সবার হাতে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যানার-ফেস্টুন।

গত নির্বাচনে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে নৌকাকে ডোবানোর জন্য ঢাকায় থাকা প্রভাবশালী মহলের চক্রান্ত ছিল বলে অভিযোগ করে নদভী বলেন, ‘নৌকার পক্ষে কাজ করায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর যে অত্যাচার শুরু হয়েছে, তার সব তথ্য অচিরেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে পৌঁছে দেব। অশুভ তৎপরতা, অপপ্রচার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মোতালেব বলেন, ‘এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। জামায়াত শিবিরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন তিনি নিজে। নির্বাচনে হেরে এখন আবোলতাবোল বকছেন। তিনি নিজে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম সম্পাদককে ১৮টি মামলা দিয়েছেন। আমি কি দিয়েছি? আমি উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি জানি কীভাবে প্রশাসন চালতে হয়। এখানে যে বলা হচ্ছে ১২ এমপি, এসব অবান্তর।’