ইউপি চেয়ারম্যান ও নেতাদের উপস্থিতিতে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতার বিয়ে

বাল্যবিবাহ
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদাড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি উজ্জ্বল কিরণের (২৬) সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক কিশোরীর (১৭) প্রেমের সূত্র ধরে তাঁদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাত ১২টার দিকে ওই কিশোরীর বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। এতে বরপক্ষের হয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।

উজ্জ্বল কিরণ হাকিমপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামের নূরে আলমের ছেলে। ওই কিশোরীর বাড়ি উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। জন্মসনদ অনুযায়ী, তাঁর জন্মতারিখ ২০০৬ সালের ১৭ জুন।

এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের হাকিমপুর উপজেলার সভাপতি সুমন মণ্ডল ও সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তাঁরা ধরেননি।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদাধিকারে ইউনিয়ন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বলে জানিয়েছেন হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর–এ আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাল্যবিবাহের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনার মাধ্যমে জানলাম। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সকালে কিশোরী এসএসসির শেষ ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা শেষ হলে উজ্জ্বল কিরণ তাকে নিয়ে পালিয়ে যান। পরে পরিবারের লোকজনের বিয়ের আশ্বাসে তাঁরা বাড়িতে ফেরেন।

চার দিন পর গতকাল সোমবার দুই পরিবারের সম্মতিতে কিশোরীর বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। এ সময় বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বোয়ালদাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছদরুল ইসলাম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম প্রমুখ।

তবে খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার খলিলুর রহমান বিয়ে রেজিস্ট্রির কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য আমাকে সাতকুড়ি গ্রামে একটি বিয়ে রেজিস্ট্রি করার জন্য মুঠোফোনে ডেকে নেন। পরে আমি সেখানে গিয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রি না করে চলে আসি। রেজিস্ট্রার খাতায় আমি বর বা কনের কোনো স্বাক্ষর নেইনি।’

বোয়ালদাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছদরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেমেয়ে দুজনে পালিয়ে গিয়ে কোর্টে এফিডেভিডের মাধ্যমে বিয়ে করেছে। গতকাল মেয়ের বাড়িতে আনুষ্ঠানিকতা হয়েছে। স্থানীয় কাজী বিয়ে পরিয়েছেন। আমি বিয়ের দাওয়াতে গিয়েছিলাম।’