ভোলায় ইউপি উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দৃশ্য। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে
ছবি: প্রথম আলো

ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটায় শুরু হলেও ভোটারদের উপস্থিতি কম। ভোটার উপস্থিতি কম বিষয়ে দুই প্রার্থী পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।

বিএনপির সমর্থক ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী (আনারস প্রতীক) নাজিম উদ্দিন হাওলাদারের অভিযোগ, নৌকার লোকজন পথে পথে ভোটারদের বাধা, কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া, ভোটারদের আঙুলের ছাপ নিয়ে বের করে দেওয়া ও বুথে ঢুকে নৌকার ওপর টিপ দেওয়ার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম।

আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবদুল হাইয়ের অভিযোগ, ভোটারদের নম্বর স্লিপ না দেওয়ার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম। এখন স্লিপ দেওয়া শুরু হয়েছে। ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।

আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সরেজমিন চরপাতা ইউনিয়নের তিনটি ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম দেখা গেছে। আজ সকালে ভোট শুরুর পর ২ নম্বর ওয়ার্ডের চরপাতা নলগোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ১৬টি কক্ষে নৌকার এজেন্ট ছাড়া কোনো প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া যায়নি। সেখানে ভোটাররা অভিযোগ করেন, ইভিএমে আঙুলের ছাপ দেওয়া শেষ হলে বুথের মধ্যে ঢুকে প্রতীকে টিপ দেওয়ার আগে নৌকার লোকজন টিপ দিয়ে দিচ্ছেন।

কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শ্যামল কুমারের কাছে বুথে ঢুকে প্রার্থীর এজেন্ট কেন ভোট দিয়ে দিচ্ছেন—এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব না দিয়ে সবাইকে সাবধান করে দেন। এ সময় তিনি বলেন, আনারস প্রতীকের এজেন্টদের আইডি কার্ড আনতে বলেছেন। কিন্তু তাঁরা আর আসেননি।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট ছাড়া কোনো প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া যায়নি। অবশ্য এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, একটি ছাড়া সব কক্ষে এজেন্ট আছেন। তবে সকাল থেকেই ভোটারদের উপস্থিতি খুব কম।

ইভিএমে এবারই প্রথম ভোট দিতে আসেন ২ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল বারেক। তিনি বলেন, শুধু আঙুলের ছাপ দিতেই আধা ঘণ্টা লেগেছে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হালিমা বেগম জানান, আঙুলের ছাপ না পাওয়ায় ভোট দিতে পারেননি তিনি।

ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা নলগোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কিছু ভোটার দেখা যায়।বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে
ছবি: প্রথম আলো

আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নাজিম উদ্দিন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, সব কেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। পথে পথে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে ভোটার উপস্থিতি কম। যাঁরা ভোট দিতে যাচ্ছেন, তাঁদের হাতের আঙুলের ছাপ নিয়ে বের করে দেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নীরব রয়েছে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল হাই বলেন, ‘৯ নম্বর কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে দেখি নৌকা মার্কা নেই। পরে অভিযোগ করলে আরেকটি ইভিএম মেশিন আনা হয়।’
ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, বেলা বাড়লে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে পারে। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। টহল বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

গত ২৩ জানুয়ারি চরপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মারা যান। ২৫ এপ্রিল এ ইউনিয়নে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে দুজন দলীয় প্রার্থী, বাকিরা স্বতন্ত্র প্রার্থী।