নরসিংদীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ দুই শিক্ষার্থী নিহত
নরসিংদীতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এই দুজন হলেন নাম তাহমিদ তামিম (১৫) ও মো. ইমন মিয়া (২২)।
নিহত তাহমিদ তামিম নরসিংদী শহরের নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমসের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। শিবপুর উপজেলার পুটিয়া ইউনিয়নের কারারচর এলাকার মো. ইমন মিয়া শিবপুরের সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের শিক্ষার্থী।
তাহমিদ তামিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান জানান, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তাহমিদকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।
ইমন মিয়ার মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাহমুদুল কবির বাসার বলেন, গুলিবিদ্ধ ওই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণার পরই তাঁর স্বজনেরা হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে চলে গেছেন।
বেলা সোয়া ৩টা থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শহরের ভেলানগর এলাকার জেলখানার মোড়ে জড়ো হন। বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে নানা বয়সী শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। শিক্ষার্থীদের স্লোগানে প্রকম্পিত হয় জেলখানার মোড় এলাকা। বেশ কিছু টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন তারা।
বিকেল ৪টা থেকে স্টেডিয়ামসংলগ্ন স্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাদের উদ্দেশ্য করে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীরাও পুলিশ সদস্যদের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় পুলিশের গুলিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন। আহত শিক্ষার্থীদের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতাল ও নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে নরসিংদীর সিভিল সার্জন ফারহানা আহমেদ বলেন, সরকারি দুই হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ দুজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। তাদের দুজনের বুকেই ছররা গুলি বিদ্ধ ছিল। স্বজনেরা তাদের লাশ নিয়ে চলে গেছেন। দুই হাসপাতাল মিলিয়ে এ পর্যন্ত দেড় শতাধিক গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ১০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আরও রোগী আসছে, চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনির্বাণ চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছেন। উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের সামাল দিতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে কারও মৃত্যুর খবর তাদের জানা নেই।