বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিস কক্ষে ঢুকে কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করলেন কর্মচারী

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ছবি: প্রথম আলো

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে রানাকে তাঁর অফিস কক্ষে ঢুকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করা এক কর্মচারীর (পাম্প অপারেটর) বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

লাঞ্ছনার বিচার চেয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম রেজিস্ট্রার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

মজুরি ভিত্তিতে কাজ করা ওই কর্মচারীর নাম সৈয়দ মতিয়ার রহমান। তাঁর অভিযোগ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম তাঁকে (মতিয়ার) চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন। তিনি আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে তাঁকে ওই টাকা দিয়েছেন। কিন্তু শহিদুল চাকরি দেননি। পরে টাকা ফেরত চাইলে মাত্র এক লাখ টাকা দিয়েছেন। এরপর বাকি টাকা চাইলে শহিদুল ইসলাম তাঁকে (মতিয়ার) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের এক সদস্য ও তাঁর আত্মীয়ের প্রভাব দেখিয়ে শাসান। পুনরায় টাকা চাইলে শহিদুল তাঁকে হয়রানি করার জন্য থানায় জিডি করেন। আজ দুপুরে পুনরায় ওই টাকা চাইতে গেলে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। শহিদুলকে লাঞ্ছিত করেননি বলে দাবি করেন তিনি।

কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার কাছে সাড়ে চার লাখ টাকা পেত কর্মচারী মতিয়ার রহমান। ওই টাকা আমি ধার নিয়েছিলাম সুদের বিনিময়ে। সেই টাকা অনেক আগেই আমি পরিশোধ করে দিয়েছি। তাঁর একটি ব্ল্যাঙ্ক চেকও আমার কাছে আছে। তারপরও সে আমার কাছে টাকা দাবি করে আসছে এবং হুমকি দিয়ে আসছে। আমার কাছে চাঁদা দাবি করছে এখন। সে জন্য এর আগে আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম। তারপরও মতিয়ার আজকে অফিস চলাকালীন আমার সহকর্মীদের সামনে আমাকে লাঞ্ছিত, আঘাত ও জুতাপেটা করেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, সৈয়দ মতিয়ার রহমান ও মো. শহিদুল ইসলামের মধ্যে টাকার লেনদেন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আছে। এসব বিষয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলমান। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর পদোন্নতিও আটকে রেখেছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের উপপরিচালক সুব্রত কুমার বাহাদুর বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। অফিস চলাকালীন একজন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ভুক্তভোগী বিচার চেয়ে আবেদন করেছেন, যা সুপারিশসহ রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো হয়েছে। আমরা চাই, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীর বিচার করা হোক।’

রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন। উপাচার্যের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।