বৃষ্টি উপেক্ষা করে যুক্তির মেলায়

রাজবাড়ীতে চলছে পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসব। বিতর্ক পরিচালনা করছেন বিচারকেরা। মঙ্গলবার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

সকাল সাড়ে সাতটা। রাজবাড়ীতে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এরই মধ্যে বৃষ্টি উপেক্ষা করে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জড়ো হতে থাকে কিশোর-তরুণ শিক্ষার্থীরা। তাদের কারও কারও সঙ্গে শিক্ষক ও অভিভাবক। নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্নের পর শুরু হয় পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসব।

‘যোগ দাও যুক্তির মেলায়’ প্রতিপাদ্যে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজবাড়ীতে পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসব শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। এতে রাজবাড়ীর ১২টি স্কুল অংশ নেয়।

বিতর্ক উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আজিজা খানম। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর রাজবাড়ী প্রতিনিধি এজাজ আহম্মেদ। মাদকের কুফল ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সচেতনতামূলক বক্তব্য দেন প্রথম আলো বন্ধুসভা রাজবাড়ীর উপদেষ্টা চিকিৎসক পূর্ণিমা দত্ত। বন্ধুসভার পরিবেশ ও বনবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান ও সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক সপ্তদীপা পাল অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

উদ্বোধনী পর্বে আজিজা খানম বলেন, বিতর্ক মানুষের চেতনাকে শাণিত করে। যুক্তির মাধ্যমে যেকোনো বিষয়ের সমাধান করা যায়। বিতর্ক শিশুদের সৃজনশীলতা বিকশিত করে নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। এসব প্রশ্ন সমাধানে শিশুরা অপরের সঙ্গে আলোচনা করে। সব মিলিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে বিতর্কের বিকল্প নেই। বিতর্কচর্চা আরও প্রসারিত করতে হবে। বিতর্কচর্চাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। এতে সমাজ একটি যুক্তিনির্ভর সৃজনশীল জাতি পাবে।

জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে রাজবাড়ীতে পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসবের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। মঙ্গলবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে চিকিৎসক পূর্ণিমা দত্ত বলেন, বর্তমানে শিশু-কিশোরেরা মুঠোফোননির্ভর হয়ে পড়ছে। মুঠোফোন তাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অনুষঙ্গ হয়ে আছে। কিন্তু মুঠোফোনে আসক্ত হওয়া চলবে না। এতে মানসিক সমস্যা তৈরি হয়। এ ছাড়া তিনি শিক্ষার্থীদের মাদক থেকে দূরে থাকতে বলেন।

বিতর্কে অংশ নেওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ইয়াছিন উচ্চবিদ্যালয়, অংকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বহরপুর উচ্চবিদ্যালয়, বেথুলিয়া বারলাহুরিয়া সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা, বালিয়াকান্দি পাইলট বালক উচ্চবিদ্যালয়, রাজধরপুর উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা জর্জ সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়, আর এস কে ইনস্টিটিউশন, গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃতি সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও চন্দনী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

বিতর্ক উৎসবের বিভিন্ন পর্বে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রাজবাড়ী সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক সেলিম রেজা, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক কে এম আজাদুর রহমান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম দাস, রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবদুল হামিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অমিতা চক্রবর্তী, জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন, আফড়া আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল জব্বার, রাজবাড়ী ডিবেট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক উদ্দিন ও সাদমান সাকিব।

দ্বিতীয়বারের মতো সারা দেশে পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের ৩৫টি জেলা ও রাজধানীতে ৫টি অঞ্চলে বিতর্ক উৎসব হচ্ছে। এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে প্রথম আলো বন্ধুসভা। প্রচার সহযোগী হিসেবে আছে নাগরিক টেলিভিশন।