সিলেটের সারদা হল চালুর দাবি, মেয়রের উপস্থিতিতে প্রতিবাদী সমাবেশ
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সারদা স্মৃতি ভবন সংস্কৃতিচর্চার জন্য খুলে দেওয়ার দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ। মঙ্গলবার বিকেলে চারটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি হয়। এ সময় সংস্কৃতিকর্মীরা অভিযোগ করেন, স্মৃতি ভবনের দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ভবনটিকে সংস্কৃতিচর্চার জন্য উন্মুক্ত না করে অচল করে রেখেছে। এ ভবনের সামনে ময়লার গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়েছে।
কর্মসূচির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী উপস্থিত থেকে সংস্কৃতিকর্মীদের অভিযোগ শোনেন। পরে বক্তৃতায় তিনি বলেন, সারদা হল রক্ষার আন্দোলন অবশ্যই যুক্তিসংগত। এ ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে সারদা স্মৃতি ভবন সংস্কৃতিচর্চার জন্য খুলে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশন পরিচালিত পীর হবিবুর রহমান পাঠাগারও নভেম্বর মাসের মধ্যে নিজস্ব স্থানে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, আজ সম্মিলিত নাট্য পরিষদের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দ আয়োজন ও নাট্যোৎসব বাতিল করে সংগঠনটি সারদা স্মৃতি ভবন (সারদা হল) সংস্কৃতিচর্চার জন্য খুলে দেওয়ার দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশের আয়োজন করেছে। এরই অংশ হিসেবে আজ কর্মসূচি উপলক্ষে গান, আবৃত্তি, নৃত্য ও নাটক পরিবেশিত হয়েছে। এসব পরিবেশনায় উদীচী, থিয়েটার বাংলা, থিয়েটার মুরারিচাঁদ, নৃত্যশৈলীর সদস্যরা অংশ নেন। গান পরিবেশন করেন পল্লবী দাস।
প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মিশফাক আহমেদ চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্তের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মো. আরশ আলী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরামুল কবির, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মোকাদ্দেস বাবুল, সাংস্কৃতিক সংগঠক শামসুল বাছিত শেরো ও নিরঞ্জন দে, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সদস্য সামসুল আলম সেলিম ও জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, নৃত্যশিল্পী নিলাঞ্জনা যুঁই, বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী কিম, সিলেট ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সভাপতি ফরিদ আহমদ, সাংবাদিক মইনুদ্দিন মনজু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সারদা স্মৃতি ভবনের দেখভাল করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। অথচ ঐতিহ্যবাহী এ ভবনের ভেতরে-বাইরে জঞ্জাল তৈরি করে রেখেছে সিটি কর্তৃপক্ষ। সারদা হল সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীদের সাংস্কৃতিক চর্চার স্থান হলেও দীর্ঘদিন ধরে নানা অজুহাতে সিটি কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যবহারিক যন্ত্রপাতি, বিভিন্ন প্রকার গাড়ি ও অস্থায়ী পাঠাগার রেখে হলটিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বারবার দাবি জানানোর পরও সংস্কৃতিচর্চার জন্য হলটি সংস্কার করা হয়নি এবং সংস্কৃতিচর্চা বন্ধ রাখা হয়।