২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

কটিয়াদীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার দুই হাতের কবজি কেটে দিল দুর্বৃত্তরা

কটিয়াদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি নয়ন মিয়া
ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি নয়ন মিয়াকে (৩৬) কুপিয়ে দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার গচিহাটা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে কাচারিপাড়া মোড়সংলগ্ন এলাকায় তিনি এই হামলার শিকার হন।

রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় নয়নকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। নয়নের বাড়ি উপজেলার সহশ্রাম ধুলদিয়া ইউনিয়নের রায়খলা গ্রামে। তাঁর বাবা শাহজাহান মিয়া এই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান। রাজনৈতিক বিরোধের জেরে এই হামলা হতে পারে বলে ধারণা করছে পরিবার।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, ব্যক্তিগত কাজ শেষ করে রাত পৌনে ৯টার দিকে নয়ন মিয়া একাই বাড়ি ফিরছিলেন। কাচারিপাড়া মোড়সংলগ্ন মুচিবাড়ির কাছে যাওয়ামাত্র কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁর পথ আগলে ধরে। কিছু না বলেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁর দুই হাতের কবজি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে তারা। এরপর দুর্বৃত্তরা চলে যায়। নয়নের চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসেন। তাঁরা নয়নের বিচ্ছিন্ন দুটি কবজি মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। প্রথমে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। রাতেই সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

নয়নের বাবা শাহজাহান মিয়া অসুস্থ। খুব বেশি কথা বলতে পারেন না। এই বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সংসদ নির্বাচনে তাঁরা নৌকা কিংবা দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ না নেওয়ায় এলাকায় নতুন করে শত্রুপক্ষ তৈরি হয়েছিল। হামলার সঙ্গে রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে।

কটিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলা নিয়ে সংসদীয় আসন কিশোরগঞ্জ-২। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল কাহার আকন্দ। কিন্তু তিনি দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিনের কাছে হেরে যান। নয়ন দলীয় প্রার্থী কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থী পক্ষে ছিলেন না। তিনি আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি থেকে একাধিকবার বহিষ্কার হওয়া নেতা আখতারুজ্জামানের পক্ষে নির্বাচনে কাজ করেন। এ নিয়ে দলে ক্ষোভ ছিল। এ ছাড়া দেড় বছর আগে আধিপত্য নিয়ে গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে সহিংসতায় দুজন প্রাণ হারান। নয়ন ও তাঁর বাবা এক পক্ষের দায়ের করা মামলার আসামি ছিলেন। যদিও পরবর্তী সময় অভিযোগপত্র থেকে দুজনের নাম বাদ পড়েছিল। কিন্তু ওই ঘটনার উত্তেজনা এখনো গ্রামে চলমান। ওই জেরেও হামলা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজনের অনেকে।

আবদুল কাহার আকন্দের ছোট ভাই সহশ্রাম ধুলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কাসেম আকন্দ বলেন, গ্রামে দুটি পক্ষ রয়েছে। নয়ন মিয়ারা একটি পক্ষের। এই কারণে মামলার আসামিও হতে হয়েছে। ধারণা করছেন, পূর্ববিরোধের সূত্রে নয়ন হামলার শিকার হতে পারেন।

কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, নয়নের ওপর হামলা চালানোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।