করোনার পর অনেকে ঝরে পড়েছে, এটা বাড়তে দেওয়া যাবে না  

সিলেট বিভাগীয় শহরের টিলাগড় এলাকায় মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজের অবস্থান। ১৮৯২ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১২৪ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই কলেজের শিক্ষার্থীসংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। এখানে উচ্চমাধ্যমিক ও পাস কোর্স ছাড়াও ১৫টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও ১৬টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর পাঠদান করা হয়। কলেজের নানা বিষয় নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া অধ্যক্ষ পান্না রানী রায়ের সঙ্গে।

এমসি কলেজের অধ্যক্ষ পান্না রানী রায়

প্রশ্ন :

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়েছেন। সম্ভবত কলেজ প্রতিষ্ঠার ১৩০ বছরের ইতিহাসে আপনি দ্বিতীয় নারী অধ্যক্ষ। কেমন লাগছে?

পান্না রানী রায়: অবশ্যই ভালো একটা অনুভূতি কাজ করছে। বাংলাদেশে বর্তমানে নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছেন। একসময় মনে করা হতো, নারীরা শুধু গৃহস্থালির কাজে নিয়োজিত থাকবেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নারীরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন এবং ভালো ফল করে সব পেশায় দক্ষতা দেখিয়ে এগিয়ে চলছেন।

প্রশ্ন :

অধ্যক্ষ হওয়ার আগে আপনি এই কলেজেরই উপাধ্যক্ষ ছিলেন। ফলে কলেজের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়েও আপনি অবহিত। ভবিষ্যতে কীভাবে কলেজকে এগিয়ে নেওয়া যায়, এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা কী আপনার আছে?

পান্না রানী রায়: কিছুদিন পর আমি অবসরে চলে যাব। আমার হাতে তাই সময় অল্প। তবে শিক্ষার গুণগত মানের দিকেই বেশি নজর রাখা উচিত বলে আমি মনে করি। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে সংগতি রেখে মানবসম্পদ তৈরি করতে না পারলে সবই একসময় অর্থহীন হয়ে পড়বে। তাই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক—সবাইকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। বিশেষ করে করোনার পর আমাদের অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে, এটা আর কিছুতেই বাড়তে দেওয়া যাবে না।  

প্রশ্ন :

অতীতে নানা নেতিবাচক কারণে মাঝেমধ্যে এমসি কলেজ সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব বিষয় মোকাবিলায় আপনার কী ধরনের উদ্যোগ থাকবে?

পান্না রানী রায়: কোনো ধরনের খারাপ কর্মকাণ্ডকে আমরা সমর্থন করি না। কলেজে অনেক ভালো ভালো কাজও হচ্ছে। সেসব কাজকে আমরা উৎসাহিত করছি। কলেজে অনেক সাংস্কৃতিক সংগঠন আছে। এসব সংগঠনকে কলেজের পক্ষ থেকে সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করা হয়, সংগঠনের সদস্যদের উৎসাহিত করা হয়। সংস্কৃতি, ক্রীড়া, সাহিত্যচর্চাসহ ইতিবাচক কাজে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেওয়া হয়। আমরা মনে করি, ইতিবাচক কাজে শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্টতা বাড়ানো গেলেই নেতিবাচক কাজ থেকে তাদের দূরে রাখা সম্ভব হবে। তাই আমরা শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক কাজে সব সময় উৎসাহ দিই।  

প্রশ্ন :

কলেজে শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের সমস্যা আছে বলে অভিযোগ। বিশেষত ছাত্রাবাসে আসনের সংকট তীব্র। সমস্যা সমাধানে আপনি কী করবেন?

পান্না রানী রায়: আমাদের দুটি ছাত্রী হোস্টেল আছে। প্রয়োজন অনুযায়ী ছাত্রীরা এখানে আসন পাচ্ছে। কোনো সংকট এখানে নেই। ছাত্র হোস্টেলেও তেমন কোনো সমস্যা নেই। কলেজের সার্বিক পড়াশোনার মানও ভালো। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এখানে আন্তরিক পরিবেশে পাঠদান ও পাঠ গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে।