আ.লীগ নেতাকে নিয়ে সংসদ সদস্য প্রাণ গোপাল দত্তের বক্তব্যসহ ভিডিও নিয়ে তোলপাড়

অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের সংসদ সদস্য। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুবারের উপাচার্য ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৪ জানুয়ারি দুপুরে চান্দিনা পশ্চিম বাজারের হাজী ম্যানশনে সাবেক পৌর মেয়র মো. মফিজুল ইসলামের ব্যক্তিগত দপ্তরে যান সংসদ সদস্য প্রাণ গোপাল দত্ত। তিনি সাবেক মেয়রের চেয়ারে বসে ছিলেন। তখন তাঁর পাশে দলীয় নেতা-কর্মীরা ছিলেন। ঘরোয়া আলোচনায় তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে প্রাণ গোপাল দত্তকে বলতে শোনা যায়, ‘...এখানে ওপেন ক্লোজ বড় কথা না। বড় কথা হলো আজকে আমি এখানে এসেছি। বরং আরও বড় উপকার করেছি। এডিবির কাজের ব্যাপারে তদন্ত গিয়েছিল, তোমার (মফিজুল) বিরুদ্ধে। তোমার ঘরের লোক লিখছে। ঘরের লোক লিখছে। সেই জিনিসটা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে। তো অসুবিধা কী আছে?’

প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ভিডিওটি সম্পাদনা করা কি না, সে ব্যাপারে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বক্তব্য খণ্ডিত আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।’

সংসদ সদস্যের বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পর চান্দিনা পৌর আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সংসদ সদস্যের বক্তব্যকে ‘সুপার এডিট’ করে ভাইরাল করার প্রতিবাদ জানানো হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা ভিডিওটি ভাইরাল করেন বলে অভিযোগ করেন অন্য অংশের নেতা-কর্মীরা।

সভায় মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, ৪ জানুয়ারি সংসদ সদস্য প্রাণ গোপাল দত্ত তাঁর দপ্তরে যান। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার বিষয়ে তাঁদের দিকনির্দেশনা দেন এবং দ্রুত বর্ধিত সভা করার তাগিদ দেন। এ সময় বিভিন্ন কথাবার্তা হয়। মফিজুল ইসলাম দাবি করেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এখনো সক্রিয়। তাঁরা সংসদ সদস্যের বক্তব্যকে সুপার এডিট করে এক মিনিটের একটি ভিডিও ভাইরাল করে। এ ছাড়া এডিট করা ভিডিও এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে কয়েকটি টিভি ও পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করিয়েছেন; যা চান্দিনা আওয়ামী লীগ ও অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা।’

মফিজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমি চান্দিনা পৌরসভার মেয়র ছিলাম। ওই সময় আমার কাছের লোকজনও আমার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ নিয়ে এমপি মহোদয়ের কাছে গিয়েছিলেন। তিনি মিথ্যা ওই সব অভিযোগ ছিঁড়ে ফেলেন। এই কথাটিকেও একটি কুচক্রী মহল দুর্নীতি দমন কমিশনের নাম জড়িয়ে ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন। আমি ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’

সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবু তাহের ভূঁইয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কাজী আখলাকুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইব্রাহিম খলিল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর আবু কাউছার, বাড়েরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সেলিম ভূঁইয়া, পৌর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক মো. আলী হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।