নরসিংদীতে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের কোপে আহত ব্যক্তির চার দিন পর মৃত্যু

কুপিয়ে হত্যা
প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর শিবপুরে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের উপর্যুপরি কোপে আহত হওয়ার চার দিন পর ফিরোজ মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার বেলা তিনটার দিকে রাজধানীর গুলশানের একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে শিবপুরের তাতারকান্দি এলাকার মসজিদসংলগ্ন স্থানে তাঁকে উপর্যুপরি কোপানোর ঘটনা ঘটে।

নিহত ফিরোজ মিয়া শিবপুরের সাধারচর ইউনিয়নের শিরেরকান্দা গ্রামের হেলালুদ্দিন মিয়ার ছেলে। স্থানীয় বন্যার বাজারের ইলেকট্রনিক পণ্য মেরামতের মেকানিক ছিলেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় মানুষেরা জানান, গত মঙ্গলবার রাতে দোকান বন্ধ করে নিজের মোটরসাইকেলে চেপে বাড়ি একাই ফিরছিলেন ফিরোজ মিয়া। তাতারকান্দি মসজিদের সামনে পৌঁছানোর পর আগে থেকে ওত পেতে থাকা একদল দুর্বৃত্ত পথ রোধ করে তাঁকে মোটরসাইকেল থেকে নামান। পরে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই দুর্বৃত্তরা সঙ্গে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ফিরোজকে উপর্যুপরি কোপাতে থাকেন। তাঁর চিৎকার ও গোঙানির শব্দ শুনে ওই মসজিদের ইমাম বেরিয়ে এলে তাঁরা পালিয়ে যান।

ঠিক কী কারণে তাঁকে এত নির্দয়ভাবে কোপানো হলো, এ বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ফিরোজকে মিয়া উদ্ধার করে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে ঢাকায় পাঠান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল) ঘুরে তিন দিন আগে স্বজনেরা তাঁকে গুলশানের একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।

ফিরোজ মিয়ার স্বজনেরা জানান, তাঁর মাথায়, কানে, হাতে ও পায়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপানো হয়। তাঁর বাঁ হাতে এমনভাবে কোপ দেওয়া হয়, একদিকে দুই আঙুল, আরেক দিকে তিন আঙুল আলাদা হয়ে গিয়েছিল। তাঁর ডান কান কেটে গিয়ে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে ছিল। এ ছাড়া তাঁর শরীরের আরও ৫-৬ জায়গায় কোপানো হয়। ঠিক কী কারণে তাঁকে এত নির্দয়ভাবে কোপানো হলো, এ বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

জানতে চাইলে শিবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহীদুল ইসলাম জানান, ‘ঘটনার পরদিনই ফিরোজ মিয়ার পরিবারের সদস্যরা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত করতে গত বৃহস্পতিবার আমি নিজেই ঢাকার হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে দেখে এসেছি। আইসিইউতে থাকায় ও চিকিৎসকের অনুমতি না মেলায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। আজ তাঁর মৃত্যুর সংবাদ শুনলাম।’

শহীদুল ইসলাম আরও জানান, ওই মামলা এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করা হবে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।