দ্রুত বিচারকাজ শেষ করে বিচারপ্রার্থীদের স্বস্তি দেওয়ার আহ্বান প্রধান বিচারপতির

যশোর জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আজ শনিবার আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ছবি: প্রথম আলো

আদালতের বারান্দা থেকে বিচারপ্রার্থীদের স্বস্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। আজ শনিবার সকালে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যশোর আদালতে ২০ বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে, এমন মামলা পেন্ডিং রয়েছে। এটার মানে হচ্ছে, আমরা গত ২০ বছরে ওই মানুষগুলোকে বিচার দিতে পারিনি। এর জন্য দায়ী কে? আমি মনে করি, বিচারক ও আইনজীবী—দুজনই দায়ী। আর কিছুটা দায়ী হতে পারে প্রসেস (প্রক্রিয়া)। যে প্রসেসে বিচার হয়।’

সেবাপ্রার্থীদের কষ্টের কথা ভেবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাতে সহজেই মামলা নিষ্পত্তি হয়, সেই চেষ্টা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা আদালতের বারান্দা থেকে বিচারপ্রার্থীকে এক দিন আগেও কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে পারলে তিনি স্বস্তি পাবেন।’

বিচার বিভাগকে গতিশীল করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষ যদি বছরের পর বছর আদালতের বারান্দায় ঘোরে, যদি ন্যায়বিচার না পায়, তাহলে ওই ব্যক্তি যদি বলে, এ দেশে বিচার-আচার নেই, সেটা অন্যায় হবে? এ জন্য আপনাদেরকে অনুরোধ করি, আসুন, আমরা চেষ্টা করে দেখি। এটা কারও একার পক্ষে সম্ভব নয়। একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে।’

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইসহক। সভা সঞ্চালনা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু মর্ত্তুজা।

সভায় আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আসুন, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করি। পরিশ্রম করে জুডিশিয়ারির গতি বৃদ্ধি করি। বিচারপ্রার্থীকে আর যাতে বছরের পর বছর, ২০-৩০ বছর আদালতের বারান্দায় ঘুরতে না হয়, সেই চেষ্টাই করি।’

বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামের জন্যে যশোর জেলা জজ আদালতে ন্যায়কুঞ্জ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী
ছবি: প্রথম আলো

আইনজীবী হতে গেলে সততার কোনো বিকল্প নেই। কোনো আইনজীবীর মধ্যে অসততা থাকলে তিনি বেশি দূর উঠতে পারবেন না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এর আগে সকালে জেলা জজ আদালত চত্বরে বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামের জন্য ন্যায়কুঞ্জ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এরপর তিনি আদালত চত্বরে জলপাইগাছের একটি চারা রোপণ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম, স্পেশাল জেলা জজ মো. সামছুল হক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম কবীর, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদা জাহাঙ্গীর, জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার প্রমুখ।