সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস। বুধবার দুপুরে বেলকুচি ইউএনও কার্যালয়েছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আফিয়া সুলতানার কাছে থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

এ সময় বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

আবদুল লতিফ বিশ্বাস সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু দলের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মমিন মণ্ডল। মনোনয়নবঞ্চিত আবদুল লতিফ বিশ্বাস স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ কারণে তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে গতকাল মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন। সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালেই আমরা আবদুল লতিফ বিশ্বাসের পদত্যাগপত্রটি হাতে পেয়েছি। এরপর প্রক্রিয়া শেষে বিকেলেই সেটি সচিবালয়ে পাঠানো হয়েছে।’

মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর আবদুল লতিফ বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম, পাইনি। এদিকে কোনো প্রার্থী যেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ না করেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণা অনুযায়ী আমি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। এই আসনে আমি জয়ী হব বলে শতভাগ আশা রাখি।’

আরও পড়ুন

লতিফ বিশ্বাস আরও বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি। সব নির্বাচনে নিজে যেমন নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছি, তেমনি অন্যদেরও বিজয়ী করতে নিরলস পরিশ্রম করেছি। কখনো নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করিনি। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে বাধা নেই বলে দলীয়প্রধান ঘোষণা দেওয়ায় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি।’

লতিফ বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের সংসদীয় আসনের প্রতিটি এলাকায়, গ্রামে গ্রামে আমার পদচারণ অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি দলমত-নির্বিশেষে আমাকে অতীতের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। আমি বিজয়ী হলে আমার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাঁতশিল্পের বিকাশ, এনায়েতপুর থানাকে উপজেলায় বাস্তবায়ন, বেকার সমস্যা দূরীকরণ, নদীভাঙন রোধসহ এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে যথাযথ অবদান রাখব, ইনশা আল্লাহ।’

আরও পড়ুন

আবদুল লতিফ বিশ্বাস ১৯৯৬ সালে সিরাজগঞ্জ-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেলেও তিনি বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে আবারও দলের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সেবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তবে ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাঁর পরিবর্তে আওয়ামী লীগ এই আসনে প্রয়াত শিল্পপতি আবদুল মজিদ মণ্ডলকে মনোনয়ন দেয়। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুল মমিন মণ্ডলের বাবা।

লতিফ বিশ্বাস এরপর সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক ও পরপর দুইবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ ছাড়া ২০১৫ সালে তিনি সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ২০২০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।

আরও পড়ুন