প্রতিমন্ত্রী শরীফের আয়ের মূল উৎস মাছ চাষ

শরীফ আহমেদ

১০ বছরে ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর ও তারাকান্দা) আসনের সংসদ সদস্য, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের বার্ষিক আয়, নগদ টাকা ও ব্যাংকে জমা টাকা ও সম্পদ বহুগুণ বেড়েছে। অথচ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আগে তাঁর বার্ষিক আয় ২ লাখ ৪০ টাকা ছাড়া জমানো কোনো টাকা ছিল না। পেশায় ব্যবসায়ী শরীফ আহমেদের আয়ের মূল উৎস মৎস্য চাষ। মাছ চাষ থেকে তিনি কোটি টাকা আয় করেন বলে এবারের হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

শরীফ আহমেদ ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিগত ১০ বছর সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও মাছ চাষ থেকে বছরে বড় অঙ্কের আয় আসে তাঁর। ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় দেওয়া হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, বছরে মাছ চাষ থেকে আয় হতো ১৫ লাখ টাকা। বিগত পাঁচ বছরে পুকুরের সংখ্যা না বাড়লেও এ খাতে বছরে আয় বেড়েছে ৮৫ লাখ টাকা।

২০১৮ সালে একই আসন থেকে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমে সমাজকল্যাণ ও পরে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন।

তিনটি নির্বাচনে দেওয়া হলফনামা থেকে শরীফ আহমেদের বার্ষিক আয়, নগদ টাকা, ব্যাংকে জমানো অর্থ এবং স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের বিবরণ থেকে এসব তথ্য জানা যায়। ২০১৪ সালে ব্যবসা থেকে বার্ষিক ২ লাখ ৪০ টাকা আয়ের বাইরে ছিল না নগদ টাকা, ব্যাংকে জমানো টাকা।

এমনকি ছিল না মাছ চাষের কোনো পুকুর। গত ১০ বছরে দুই মেয়াদে জাতীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে তাঁর বার্ষিক আয় বেড়েছে বহুগুণ। দ্বাদশ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী, মাছ চাষে তাঁর বার্ষিক আয় ১ কোটি টাকা। এ ছাড়া বাড়িভাড়া থেকে বার্ষিক আয় আসে বছরে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। গত পাঁচ বছরে বেড়েছে নগদ টাকা।

২০১৮ সালে তাঁর কাছে নগদ মাত্র ৮ হাজার ৯৭১ টাকা থাকলেও এখন আছে ১১ লাখ ৩৫ হাজার ১২৮ টাকা। বেড়েছে ব্যাংকে জমানো টাকাও। ২০১৮–এর নির্বাচনে ব্যাংকে ছিল ১ কোটি ৬৬ হাজার টাকা। এবার তা বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। তবে সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী হওয়ার আগে ব্যাংকে শরীফ আহমেদের কোনো টাকা ছিল না।

২০১৪ সালে গাড়ি না থাকলেও ২০১৮ সালের হলফনামায় ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকা মূল্যের গাড়ি থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। এবারের হলফমানায় ৯২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যের গাড়ির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৪ সালে কোনো পুকুর না থাকলেও পরে দুটি নির্বাচনের হলফনামায় পৈতৃক সূত্রে ২০টি পুকুরের কথা উল্লেখ করেছেন প্রতিমন্ত্রী।