মহেশখালীতে মাদ্রাসাশিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা

হত্যা
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাদ্রাসার সুপার জিয়াউর রহমানকে (৫৫) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের তাজিয়াকাটা সুমাইয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সামনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় স্বামীকে রক্ষা করতে গেলে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী রহিমা আক্তারও (৪০) গুরুতর আহত হয়েছেন।

জিয়াউর রহমান তাজিয়াকাটা মোহাম্মদিয়া এবতেদায়ি মাদ্রাসার সুপার ও উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের তাজিয়াকাটা এলাকার বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী রহিমা আক্তার তাজিয়াকাটা সুমাইয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। রহিমা আক্তার কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিহত ব্যক্তির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নূরানী মাদ্রাসা ও এতিমখানার কমিটি গঠন নিয়ে জিয়াউর রহমান ও তাঁর ভাতিজা নূরানী মাদ্রাসার শিক্ষক নছর উল্লাহর সঙ্গে একই প্রতিষ্ঠানের আরেক শিক্ষক দানু মিয়ার বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জের ধরে ইতিমধ্যে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে থানায় একাধিক মামলাও হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ মীমাংসার জন্য স্থানীয়ভাবে কয়েক দফা সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী আটজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দুপুরে মাদ্রাসা ছুটির পর জিয়াউর রহমান বাড়িতে যাচ্ছিলেন। সুমাইয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সামনে গেলে দুর্বৃত্তরা জিয়াউরকে ঘিরে ফেলে। এ সময় দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে জিয়াউরকে এলোপাতাড়ি কোপান। খবর পেয়ে জিয়াউরের স্ত্রী রহিমা আক্তার এগিয়ে আসেন। এ সময় হামলাকারীরা রহিমা আক্তারকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।

এ সময় জিয়াউরের আত্মীয় ও স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় জিয়াউর ও রহিমাকে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। কিন্তু তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে কক্সবাজার নেওয়ার পথে জিয়াউর রহমান মারা যান। রহিমা বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, জিয়াউর রহমানের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের ছয়টি আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য জিয়াউর ও তাঁর স্ত্রীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে জিয়াউর মারা যান।

স্থানীয় কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শেখ কামাল বলেন, স্থানীয় নূরানী মাদ্রাসার কমিটি গঠন নিয়ে জিয়াউর রহমান ও দানু মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় একাধিক মামলাও হয়েছে। এ বিরোধের জের ধরে হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

তবে এ ঘটনার পর দানু মিয়া গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁর মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই এ বিষয়ে দানু মিয়ার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রণব চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরার জন্য পুলিশ নানাভাবে চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে পুলিশের একাধিক দল কাজ শুরু করেছে।