রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে মঞ্জু চাকমা (৩৬) মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের দা-এর কোপে সরল চাকমা (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। আজ শনিবার বেলা তিনটার দিকে উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের চিন্তারামছড়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে গণপিটুনিতে মঞ্জু চাকমার মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তাঁর বাবা-মাকে কুপিয়ে জখম করেন বলে জানা গেছে।
নিহত সরল চাকমা কাঠের ব্যবসা করতেন। তিনি সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর শিজক গ্রামের জেরবো মুনি চাকমার ছেলে। পরিবারে তাঁর স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। গণপিটুনিতে মারা যাওয়া মঞ্জু চাকমার বাড়িও একই গ্রামে।
স্থানীয় লোকজন ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাতে মঞ্জু চাকমা তাঁর বাবা-মায়ের ওপর হামলার পর পালিয়ে যান। আজ তাঁকে বুঝিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য উত্তর শিজক গ্রামের ২০ থেকে ৩০ জন তাঁকে খুঁজতে বের হন। তাঁকে খোঁজার একপর্যায়ে গ্রামের কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে ধন্য চাকমা (৩৫) ও সরল চাকমার (৬০) ওপর অতর্কিতে হামলা করেন মঞ্জু। পরে ধন্য চাকমা পালিয়ে যেতে পারলেও সরল চাকমা পালাতে পারেননি। তাঁর মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে দা দিয়ে কোপালে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শত শত লোক ঘিরে ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন মঞ্জু চাকমাকে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই মঞ্জুর মৃত্যু হয়।
গতকাল রাতে বাবা-মাকে এলোপাতাড়ি কোপান মঞ্জু। পরে তাঁদের রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
গতকাল রাতে মঞ্জু চাকমা তাঁর মা কালাচুলি চাকমা (৫৫) ও বাবা রত্ন কুমার চাকমার সঙ্গে বাড়িতে টেলিভিশন দেখছিলেন। রাত ৮টার দিকে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পাশে থাকা দা দিয়ে বাবা-মাকে এলোপাতাড়ি কোপান মঞ্জু। পরে তাঁদের চিৎকারে এলাকায় লোকজন ছুটে এলে মঞ্জু পালিয়ে যান। রক্তাক্ত অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মধুসূদন চাকমা বলেন, ‘মানসিক ভারসাম্যহীন মঞ্জু চাকমা আমার বড় ভাইয়ের ছেলে। আজ ও গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে, খুবই দুঃখজনক। আমার বড় ভাই ও ভাবি শঙ্কামুক্ত। ঘটনার পর তাংগুমা গ্রামে মঞ্জু একজন স্বজনের বাড়িতে গিয়ে ভাত খেয়েছে। তার ভয়ে সবাই পালিয়ে গেছে। তবে আজ মঞ্জুর হামলায় একজন মারা গেছেন এবং গণপিটুনিতে মঞ্জুও মারা গেছে।’
বাঘাইছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘দা দিয়ে কুপিয়ে একজনের মৃত্যু ও মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির গণপিটুনিতে মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। বিস্তারিত জানতে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।’