দলবদ্ধ ধর্ষণের তিন দিন পর পুলিশি পাহারায় বাড়ি ফিরলেন মা-মেয়ে

নোয়াখালী জেলার মানচিত্র

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় সিঁধ কেটে মা ও মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর পুলিশের পাহারায় বাড়ি ফিরলেন ভুক্তভোগীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে তাঁরা বাড়ি ফেরেন। সারা রাত বাড়িতে পুলিশ পাহারা ছিল। পরিবারটির নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী আজ শুক্রবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, নির্যাতনের ঘটনার পর গত মঙ্গলবার থেকে তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল বিকেলের দিকে তাঁরা হাসপাতাল থেকে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত মো. হারুনের বড় ভাই মো. আলম দুই দিন ধরে নানা হুমকি দিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছেন। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ তাঁদের নিরাপত্তা দিয়ে বাড়ি ফিরতে সহায়তা করে।

আরও পড়ুন

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী আরও বলেন, পুলিশ তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার পর ভোর পর্যন্ত পাহারায় ছিল। আজ সকাল থেকে এলাকায় পুলিশ একাধিকবার টহল দিয়েছে।
সুবর্ণচরের চর জব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, শুধু পাহারা দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া নয়, পরিবারটির নিরাপত্তার স্বার্থে ওই এলাকায় পুলিশের নিয়মিত টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার পরিবারকে সব ধরনের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।

এদিকে মা ও মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা আবুল খায়েরের প্রধান সহযোগী মো. হারুনকে (৪৮) চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। গতকাল বিকেলে তাঁকে আদালত থেকে চর জব্বর থানা-পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়েছে। নানা কৌশলের আশ্রয় নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি ওসি।

আরও পড়ুন

নির্যাতনের শিকার নারীর মায়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার দিবাগত রাতে এক ব্যক্তি সিঁধ কেটে তাঁর মেয়ের ঘরে ঢোকেন। এরপর তিনি দরজা খুলে দিলে আরও দুজন প্রবেশ করেন। পরে তাঁরা তাঁর মেয়ে (৩০) ও নাতনির (১২) হাত-মুখ বেঁধে ধর্ষণ করেন। ঘটনার সময় তাঁর জামাতা বাড়িতে ছিলেন না। ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আবুল খায়ের ও মো. হারুনকে চিনতে পারেন মা-মেয়ে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে চর জব্বর থানায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ওই মামলা করেন। মামলায় আবুল খায়ের ও মো. হারুনের নাম উল্লেখ করা হয়। বাকি একজনকে অজ্ঞাত হিসেবে দেখানো হয়। আবুল খায়ের চর ওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি। পুলিশ তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করেছে।