ভোটের আগে নেওয়া টাকা ফেরত দিতে বললেন উপজেলা চেয়ারম্যান

উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তব্য দেন দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

সদ্য শেষ হওয়া রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটাররা একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। এমন অভিযোগ তুলে ভোটারদের সেই টাকা ফেরত দিতে বলেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম। এ–সংক্রান্ত একটি ভিডিও চিত্র প্রথম আলোর হাতে এসেছে।

আজ শনিবার সকালে দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, সদস্য ও সচিবদের নিয়ে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেন। জেলা পরিষদ নির্বাচনে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ভোটার ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মনসুর রহমান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের একটুও লজ্জা হচ্ছে না? একটু শরম হচ্ছে না? কার কাছ থেকে আপনারা টাকা নেননি? আমি দেখেছি, ৩ নম্বর ইউনিয়নের তিনটা লোক আর ৭ নম্বরের একটা লোক টাকা নেয়নি যে, আমরা টাকা নিব না।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা এই নির্বাচনের প্রচারকে, নির্বাচনকে এমনই নোংরাতে পরিণত করেছেন, যেটা ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। কারণ, আমি এই কারণে সাবধান করছি যে যারা প্রার্থী ছিল, তারা কিন্তু সব বাইরে অপেক্ষা করছিল। আপনাকে একটা একটা করে ধরেছে। আপনি কাকে ভোট দিয়েছেন বলেন? তিনটা ভোট তিনজনকে দিয়েছেন। বাদ বাকি টাকাগুলো ফেরত দেন। এখানে কারণ বলার কিছু নাই। কারণ তারা তো টাকা দিছে।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নজরুল আরও বলেন, ‘একটা ছেলে লোন করে ভোটে দাঁড়ায়ছে। জেদের ওপরে তাঁর মোটরসাইকেলটাও বিক্রি করে দিয়েছে। চলার পথ নাই, তার টাকাও আপনারা খান? আপনারা এই জনগণের সেবা করতে আসছিলেন? এই সেবা নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের মান রক্ষা করবেন আপনারা? আপনাদের একটু লজ্জা হয় না? যা–ই হোক, আপনারা সাবধান হোন। আর টাকাগুলান তাড়াতাড়ি ফেরত দিবেন। সাত দিনের মধ্যে ফেরত দিন।’

বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজকে একটা মিটিং ছিল। সেখানে মেম্বার-চেয়ারম্যানদের প্রশিক্ষণ ছিল। সেখানে বলেছি, ভোটটা হলো আমানত। আমার যাকে পছন্দ হবে, তাকে ভোট দেব। কিন্তু তা না করে একটা ভোটের জন্য কয়েকজনের কাছ থেকে আপ্যায়ন খরচ নিয়েছে। ভোটটা যে কাকে দিয়েছে, সেটা তারাই ভালো জানে। সবার কাছে টাকা নেবেন কেন? ফেরত দিয়ে দিন। যাকে ভোট দিয়েছেন, তাঁরটা বাদ দিয়ে বাদ বাকিদের টাকা ফেরত দিন। এটা তো ঠিক না।’

নজরুল আরও বলেন, তাঁরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নিচু পর্যায়ের সদস্য। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উপজেলা পরিষদ। ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা উপজেলা পরিষদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এগুলো করলে উপজেলা পরিষদের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। এ জন্য বিষয়গুলো নিয়ে তিনি কথা বলেছেন।