রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট ‘কাকতালীয়’

১ ডিসেম্বর থেকে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতি। তাই ব্যাগ নিয়ে আগেই চলে এসেছেন বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী। বুধবার বিএনপির মালোপাড়া বিএনপি কার্যালয়ে
ছবি: শফিকুল ইসলাম

বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে ৩ ডিসেম্বর। এদিকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ১০ দফা দাবিতে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতি। আজ বুধবার বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর এ ঘোষণা দেন। তাঁর দাবি, গণসমাবেশের সঙ্গে তাঁদের ডাকা ধর্মঘটের কোনো যোগসূত্র নেই। বিষয়টি ‘কাকতালীয়’।

তবে বিএনপি বলছে, অন্যান্য গণসমাবেশের মতো রাজশাহীর গণসমাবেশে মানুষকে আসতে বাধা দিতে এই পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।

মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করাসহ ১০ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সাফকাত মঞ্জুর। তিনি বলেন, বিভাগীয় মালিক সমিতির ১০ দফা দাবি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারসহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা আলোচনার জন্য কোনো সদুত্তর দেয়নি। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি পূরণের আলটিমেটাম দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কোনো ধরনের আশ্বাস না পাওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা থেকে রাজশাহী বিভাগে পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছেন। এর আওতায় থাকবে সব যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন। এই ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের জন্য। তবে এরই মধ্যে এমনকি আজকেও যদি দাবির পক্ষে আশ্বাস পান, তাঁরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করবেন। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাঁদের এই কর্মসূচির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

এর আগে গত শনিবার নাটোরে মালিক সমিতির এক সভায় ১০ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর তারা বিভাগীয় কমিশনারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে তাদের দাবি পূরণে চিঠি পাঠায়।

১০ দফা দাবির মধ্যে আছে—সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন করতে হবে, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়ক বা আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি-হুইলার (নছিমন, করিমন, ভটভটি, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ইত্যাদি) চলাচল বন্ধ করতে হবে, জ্বালানি তেল ও যন্ত্রাংশের মূল্য হ্রাস করতে হবে, করোনাকালে গাড়ি চলাচল না করায় সে সময়ে ট্যাক্স মওকুফ করতে হবে, সব ধরনের সরকারি পাওনাদির (ট্যাক্স-টোকেন, ফিটনেস) অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বন্ধ করতে হবে, চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স-সংক্রান্ত নানাবিধ জটিলতা নিরসন করতে হবে, পরিবহনের যাবতীয় কাগজ হালনাগাদ বা সঠিক থাকার পরও নানাবিধ পুলিশি হয়রানি বন্ধ করতে হবে, উপজেলা পর্যায়ে বিআরটিসি চলাচল দ্রুত বন্ধ করতে হবে, মহাসড়কে হাট-বাজার আয়োজন বা পরিচালনা করা যাবে না এবং চলমান হাটবাজার অতি দ্রুত উচ্ছেদ করতে হবে, যাত্রী ওঠানামার জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রত্যেক জেলায় ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ ও ট্রাক ওভারলোড বন্ধ করতে হবে।