দেশে বিদ্যুতের কারখানা আছে, জ্বালানি কেনার টাকা নাই: জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘আমাদের এখন বিদ্যুতের কারখানা আছে, জ্বালানি কেনার টাকা নাই। আওয়ামী লীগ একসময় বিএনপির উদ্দেশে বলত—খাম্বা আছে, বিদ্যুৎ নাই। আজকে আমরা বলছি—কারখানা আছে, ডলার নাই। সরকার কুইক রেন্টাল দিয়ে লুটপাট করতে চেয়েছে বলেই সময়মতো নিজের দেশের জ্বালানি, গ্যাস উত্তোলন করে নাই। জনগণের পকেটের টাকা আত্মীয়স্বজনের পকেটে ঢুকিয়েছে। ক্যাপাসিটি চার্জের নামে এক লাখ কোটি টাকা লুটপাট করেছে। আজকে ইউক্রেন যুদ্ধ আর করোনার দোহাই দিয়ে পার পেতে চায় সরকার। দেশে সত্যিকার অর্থেই যে টেকসই উন্নয়ন হয়নি, মানুষ আজ বুঝে গেছে।’
সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীন নির্বাচন, সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে রোডমার্চ উপলক্ষে বুধবার দুপুর ১২টায় দিনাজপুর শহরের লোকভবন মিলনায়তনে এসব কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণতন্ত্র মঞ্চ দিনাজপুরের সমন্বয়ক সৈয়দ ইমদাদুল হক। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দীন পাটোয়ারীসহ গণতন্ত্র মঞ্চের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদি শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে রাজনীতিকে শাসনের হাতিয়ার হিসেবে তৈরি করেছে। মানুষের কথা বলার অধিকার, খাওয়ার অধিকার, বাঁচার অধিকারের কথা বললেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, পাকিস্তানের দালাল হতে হয়।
সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, আওয়ামী লীগ আরেকটা জালিয়াতি, প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই ভিসা নীতি সাত মাস আগে ঘোষণার মধ্য দিয়ে তাদের সতর্ক করে দিয়েছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানতে সরকার ব্যর্থ উল্লেখ করেন সাইফুল হক বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখে মনে হয় না দেশে কোনো সরকার আছে। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন আওয়ামী লীগের মুনাফাখোরেরা। তাঁরা প্রতিদিন মানুষের পকেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা কেটে নিচ্ছেন। শুধু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে গত কয়েক মাসে ৫০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে এসেছেন।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, সরকার বড় বড় প্রকল্প করেছে লুটপাটের জন্য। আমেরিকার ভিসা নীতি দেশের জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায়। যে দেশকে আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছি, সেই দেশকে সোমালিয়া, নাইজেরিয়া, বেলারুশের মতো ব্যর্থ রাষ্ট্রের জায়গায় নিয়ে দাঁড় করেছে সরকার। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। গণতন্ত্র মঞ্চ কোনো দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন হতে দেবে না।