আশাশুনিতে চাল না পেয়ে জেলেদের মানববন্ধন

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে প্রকৃত জেলেদের চাল না দেওয়ায় শুক্রবার মিত্র তেঁতুলিয়া বাজার সড়কে মানববন্ধন হয়েছেছবি: প্রথম আলো

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে স্বজনপ্রীতি করে প্রকৃত জেলেদের চাল না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কাদাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দিপংকর সরকারের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন জেলেরা। শুক্রবার বেলা ১১টায় মিত্র তেঁতুলিয়া বাজার সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া, মিত্র তেঁতুলিয়া, মোকামখালী, টেকা, শাহনগর ও ঝিকরা গ্রামের শতাধিক জেলে অংশ নেন। ‘উপজেলার বঞ্চিত জেলেদের’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। কাদাকাটি ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মৎস্যজীবী গোলাম মোস্তফা, আজিজুল ইসলাম, রমজান সরদার, আফছার আলী গাজী, ঈমান মোড়ল,  শিরিনা গাজী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ইউনিয়নে কার্ডধারী জেলের সংখ্যা ৪৪১। তবে প্রকৃত জেলের সংখ্যা আরও বেশি। কিন্তু ইউপি  চেয়ারম্যান ও মৎস্য কর্মকর্তার যোগসাজশে তাঁদের কার্ড দেয়নি। অথচ ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই বরুণ সরকারের নামে জেলে কার্ড রয়েছে। সবিতা মণ্ডল, ময়না মণ্ডলসহ পরিচিত আরও অনেককে কার্ড দিয়েছেন চেয়ারম্যান।

এবার ৩৮৮ জন জেলের নামে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অন্য ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা ইউপি সদস্য ও স্থানীয় মৎস্যজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে বসে সবাই মিলে চাল ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। তবে কাদাকাটি ইউপির চেয়ারম্যান সে পথে না হেঁটে নিজের ইচ্ছেমতো স্বজনদের মধ্যে চাল বিতরণ করেছেন।

বক্তারা আরও বলেন, চাল বিতরণের আগে বিষয়টি ইউএনও রনি আলম নূরকে (সদ্য বিদায়ী) জানানো হয়েছিল। তখন উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা সত্যজিৎ মজুমদার পরিষদে এসে প্রকৃত জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা করা হয়নি। তাই প্রকৃত জেলেদের মধ্যে পুনরায় চাল বিতরণ ও প্রকৃত মৎস্যজীবীদের কার্ড দিয়ে নতুন তালিকা প্রকাশ করার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগের বিষয়ে কাদাকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিপংকর সরকার বলেন, এখানে কোনো ধরনের স্বজনপ্রীতি করা হয়নি। যাঁদের নামে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, নিয়ম মেনে সেসব নিবন্ধিত জেলেকে চাল দেওয়া হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়। এ সময় নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলেকে মৎস্য বিভাগ থেকে ৮৬ কেজি করে চাল দেওয়া হয়ে থাকে। আশাশুনি উপজেলার নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ৭ হাজার ৯৪৯ জন। এর মধ্যে কাদাকাটি ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন পাঁচ শতাধিক। তিনি অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।