চুরির অভিযোগে তরুণকে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ নেতার পেটানোর ভিডিও ভাইরাল

নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইরে চুরির অভিযোগে তরুণকে পেটাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা মিছির আলী
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইর এলাকায় মুঠোফোন চুরির অভিযোগে প্রকাশ্যে এক তরুণকে পেটানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিছির আলীকে ওই তরুণকে পেটাতে দেখা যায়। গতকাল শনিবার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, খয়েরি রঙের পাঞ্জাবি ও মাথায় সবুজ টুপি পরা আওয়ামী লীগ নেতা মিছির আলী প্রকাশ্যে এক তরুণের জামার কলার চেপে ধরে কিল-ঘুষি মারছেন। একপর্যায়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে ওই তরুণকে পেটাতে থাকেন তিনি। মারধরের একপর্যায়ে ওই তরুণ আওয়ামী লীগ নেতার পা ধরে মাফ চাইলেও তিনি নিবৃত্ত হননি। তাঁকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন। মিছির আলী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রভাবশালী হওয়ায় উপস্থিত কেউ ভয়ে মারধরের প্রতিবাদ করেননি।

ভিডিওতে শোনা যায়, ওই তরুণ তাঁর মুঠোফোন চুরির চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ করছেন আওয়ামী লীগ নেতা। এ সময় মারধরের সঙ্গে ওই তরুণকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায়।

ভিডিওর বিষয়ে ওই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন আগে আওয়ামী লীগ নেতা মিছির আলীর পকেট থেকে মুঠোফোন চুরি করার সময় ওই তরুণকে আটক করে মারধর করা হয় বলে তিনি শুনেছেন। চোর সন্দেহে ওই তরুণকে ধরে সামান্য মারধর করলে তিনি কৌশলে পালিয়ে যান। তিনি বলেন, এভাবে মারধর না করে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা উচিত ছিল। ওই তরুণ ও তাঁর পরিচয় সম্পর্কে তিনি কিছুই জানতে পারেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসদাইর বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ওই তরুণকে নির্মমভাবে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়েছেন। লাঠির আঘাতে ওই তরুণের মাথা ফেটে রক্ত বের হয়। ওই তরুণ যদি কোনো অপরাধ করে থাকেন, তাঁকে আইনের হাতে তুলে দিতে পারতেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা মিছির আলী সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি ১০ থেকে ১৫ দিন আগের। তিনি মসজিদে নামাজ পড়ে বাড়িতে ফেরার সময় ইসদাইর বাজারে পেয়ারা কিনছিলেন। তখন ওই তরুণ তাঁর পাঞ্জাবির পকেট থেকে মুঠোফোন চুরি করে পালানোর চেষ্টা করেন। টের পেয়ে তিনি হাতেনাতে তাঁকে ধরেন। পুলিশে না দিয়ে পেটানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁকে সামান্য মারধর করে ছেড়ে দেন। কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতার এক তরুণকে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি শুনেছেন। কিন্তু এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি বলেন, এ ঘটনায় কী ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।