সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে চুরি, চাকার পর এবার অন্যান্য যন্ত্রাংশ উধাও

গ্যারেজে পড়ে আছে চাকাবিহীন অ্যাম্বুলেন্সটি। সম্প্রতি অ্যাম্বুলেন্সটির ভেতরের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে হয়ে গেছে। সম্প্রতি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গ্যারেজে
ছবি: প্রথম আলো।

গ্যারেজে পড়ে আছে সরকারি নতুন অ্যাম্বুলেন্স। তবে চাকা, অক্সিজেন সিলিন্ডার, ফায়ার বক্স সিলিন্ডার, ব্যাটারি, মবিল চেম্বারসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উধাও। বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিত্র এটি।

গত দেড় বছরে তিন দফায় অ্যাম্বুলেন্সটিতে চুরি হয়েছে। থানায় দুবার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলেও রহস্য উদ্‌ঘাটন বা চোর ধরতে পারেনি পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ। ফলে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনের পেছনের জরাজীর্ণ একটি গ্যারেজে নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি রাখা। গ্যারেজের ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়ছে অ্যাম্বুলেন্সের ওপর। বাঁ পাশের দরজার গ্লাস ভাঙা। গাড়িটির কোনো চাকা নেই। গাড়ির ভেতরে অক্সিজেন সিলিন্ডার, ফায়ার বক্স সিলিন্ডার, ১২ ভোল্টের একটি ব্যাটারি ও মবিল চেম্বারের ঢাকনাও নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ রোগীদের ভোগান্তি থেকে বাঁচাতে ২০২১ সালে অ্যাম্বুলেন্সটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে অ্যাম্বুলেন্সটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গ্যারেজে এনে রাখা হয়। কিন্তু চালক না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে ছিল। এরই মধ্যে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি অ্যাম্বুলেন্সের চারটি চাকা চুরি হয় মর্মে থানায় জিডি করেন তৎকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। তখন জানা যায়, গ্যারেজের লোহার গ্রিল ভেঙে চাকা চুরি করে নিয়ে গেছে চোর। এক বছর পর চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি অ্যাম্বুলেন্সের পাশের গ্লাস ভেঙে অক্সিজেন সিলিন্ডার, ফায়ার বক্স সিলিন্ডার, ১২ ভোল্টের একটি ব্যাটারি ও মবিল চেম্বারের ঢাকনা চুরি যায়। এ ঘটনায়ও থানায় একটি জিডি করা হয়। সম্প্রতি আবার অ্যাম্বুলেন্সটিতে চুরি হয়। তবে বারবার চুরি হলেও মামলা না করে শুধু জিডি করেই দায় সারছে কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালে কর্মরত এক ব্যক্তি বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের চাকা ও অন্যান্য মালামাল চুরির পেছনে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক ও ব্যবসায়ীদের হাত থাকতে পারে।

মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোছা. মাহফুজা খাতুন বলেন, ‘আমি যোগদানের আগেই অ্যাম্বুলেন্সটির চাকা চুরি হয়। পরে আবার কিছু মালামাল চুরি হয়। আমরা মোল্লাহাট থানায় জিডি করেছি। গ্যারেজটার অবস্থা খুবই খারাপ। চাকা না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি অন্যত্র সরানোও যাচ্ছে না। এ ছাড়া আমাদের অ্যাম্বুলেন্সচালক ও নৈশপ্রহরী নেই। এ বিষয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

গ্যারেজে পড়ে আছে চাকাবিহীন অ্যাম্বুলেন্সটি। সম্প্রতি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গ্যারেজে
ছবি: প্রথম আলো

জানতে চাইলে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের সমন্বয়কারী এস এম আশরাফুল আলম বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের মালামাল চুরির বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জিডি করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের অনুসন্ধান অব্যাহত আছে।