মতলব দক্ষিণে হাটে গরুর দাম বেশি, বেচাকেনা কম

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার মুন্সিরহাট এলাকার পশুর হাটে দাম বেশি হওয়ায় দরদাম করে ফিরে যান অধিকাংশ ক্রেতাই। গতকাল বিকেলে তোলা।ছবি: প্রথম আলো

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় এবারের কোরবানির পশুর হাটে অধিকাংশ ক্রেতাই শুধু দরদাম করছেন। হাটে দুই দিন ধরে প্রচুর পশুর উপস্থিতি দেখা গেলেও বেচাকেনা খুব কম।

ক্রেতারা বলছেন, তাঁরা বুঝেশুনে পশু কিনবেন। আর এখন দাম তুলনামূলকভাবে বেশি থাকায় আপাতত কিনছেন না; কমলে কিনবেন। বিক্রি কম হওয়ায় বিক্রেতারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলার মুন্সিরহাট ও ধনারপাড় পশুর হাটে এ চিত্র দেখা গেছে।

গতকাল বিকেল চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এই দুই পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, সেখানে বিপুলসংখ্যক কোরবানির গরু ও ছাগল আছে। সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে এসব পশুর যত্ন নিচ্ছেন বিক্রেতারা। ক্রেতারা এসে দাম জানতে চাইলে, মোটা অঙ্কের দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। যথেষ্ট ভিড় থাকলেও অধিকাংশ ক্রেতাই ফিরে যাচ্ছেন শুধু দরদাম করে। তবে মাঝেমধ্যে দু-একজন ক্রেতাকে পশু কিনতেও দেখা গেছে। বিক্রি কম থাকায় বেশির ভাগ বিক্রেতা আপাতত হতাশ। তবে ঈদের আগে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা জমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তাঁরা।

বিক্রির জন্য মুন্সিরহাটে ১০টি ভিন্ন আকারের গরু এনেছেন একই এলাকার ব্যবসায়ী বাদল প্রধানীয়া। গতকাল বিকেলে মাঝারি আকারের একটি গরু দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। বাকিগুলো বিক্রি হয়নি। প্রায় সব ক্রেতাই দরদাম করছেন, কিনছেন না। আবার দাম শুনেই চলে যাচ্ছেন কেউ কেউ। বাদল বলেন, ক্রেতাদের হাবভাব দেখলে মনে হয়, হাটে তাঁরা ঘোরাঘুরি করতে এসেছেন। গরুর দিকে এক নজর চোখ রেখেই আয়েশি ভঙ্গিতে হেঁটে যাচ্ছেন। বিক্রি কম হওয়ায় আপাতত তিনি হতাশ। তবে ঈদ ঘনিয়ে এলে বিক্রি বাড়বে বলে তাঁর আশা।

এর সঙ্গে ওই বিক্রেতা যোগ করেন, এবার হাটে ছোট আকারের প্রতিটি গরু ৮০ হাজার থেকে এক লাখ, মাঝারি আকারের গরু সোয়া এক লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ কিংবা ৬০ হাজার এবং বড় আকারের গরু দুই থেকে তিন-চার লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  

এবার হাটে ছোট আকারের প্রতিটি গরু ৮০ হাজার থেকে এক লাখ, মাঝারি আকারের গরু সোয়া এক লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ কিংবা ৬০ হাজার এবং বড় আকারের গরু দুই থেকে তিন-চার লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  
বাদল প্রধানীয়া, গরু ব্যবসায়ী

ধনারপাড় এলাকার গরু ব্যবসায়ী জয়নাল বলেন, ধনারপাড় পশুর হাটে আজ আটটি গরু এনেছেন। বড় আকারের দুটি গরুর প্রতিটির দাম চাইছেন তিন লাখ টাকা। বাকি ছোট আকারের গরুগুলোর দাম চাইছেন এক লাখ টাকা করে। এগুলোর একটিও বিক্রি হয়নি। এ কারণে বেশ হতাশা এবং বিরক্তি প্রকাশ করেন তিনি।

অন্যদিকে মুন্সিরহাট পশুর হাটে কোরবানির জন্য গরু কিনতে এসেছেন উপজেলার কলাদী এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম। তিনি বলেন, তাঁরা পাঁচজন মিলে এক থেকে সোয়া লাখ টাকায় কোরবানির গরু কেনার জন্য সেখানে এসেছেন। দাম বেশি হওয়ায় কিনতে পারেননি। আশা করছেন, ঈদের আগে শেষ সময়ে পশুর দাম কমবে। এখন বাজার পরিস্থিতি দেখছেন। দাম কিছুটা কমলে পশু কিনবেন বলে জানানা তিনি।

মতলব দক্ষিণে এবার ২১টি কোরবানির পশুর হাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, এসব হাটে পর্যাপ্ত পশু উঠছে। আশা করছি, ক্রেতারা সহনীয় দামে পশু কিনতে পারবেন। পশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে এসব হাটে মোট ২১টি চিকিৎসা দল (মেডিকেল টিম) গঠন করা হয়েছে।