স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, দুই দিন পর লাশ উদ্ধার

সামিয়া
ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় অপহরণের দুই দিন পর তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিশুটিকে অপহরণের পর স্বজনদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। আজ শুক্রবার দুপুরে বাড়ি থেকে ৪০০ মিটার দূরে বনের ভেতরে একটি নালা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম দুপুরে বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

লাশ উদ্ধার হওয়া ওই শিশুর নাম সামিয়া (৯)। সে উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের রঞ্জু মিয়ার মেয়ে এবং দাড়িয়াপুর উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পর তার বাবা রঞ্জু মিয়া গত বুধবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে মুক্তিপণের বিষয়টি জেনে তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন।

পুলিশ ও নিহত শিশুর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায় সামিয়া। প্রাইভেট পড়া শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে সে বাড়িতে ফিরছিল। পথে একটি দোকানে সহপাঠীরা কেনাকাটা করতে দাঁড়ালে সামিয়া একাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু সে বাড়িতে ফেরেনি।

এদিকে সামিয়ার বাড়িতে ফিরতে দেরি দেখে তার মা রুপা আক্তার শিক্ষককে ফোন দিয়ে জানতে পারেন, সামিয়া অনেক আগেই বাড়িতে চলে গেছে। পরে মেয়েকে খুঁজতে বের হলে বাড়ির কাছাকাছি একটি স্থানে মেয়ের ব্যবহৃত জুতা পড়ে থাকতে দেখেন রুপা আক্তার। এর কিছুক্ষণ পর বাবার মুঠোফোনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ইমোতে একটি অডিও বার্তা পাঠানো হয়।

অডিও বার্তায় বলা হয়, ‘আসসালামু আলাইকুম। আপনার মেয়ে ভালো আছে। টাঙ্গাইলে আছে, আজকের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা দিলে মেয়ে পাবেন। বিষয়টি পুলিশ ও এলাকার কাউকে জানাবেন না। জানালে আপনার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, বাড়ির পাশের একটি বনের ভেতরে মাটিচাপা দেওয়া লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মেয়েটিকে ওই দিনই হত্যা করে বনের ভেতরে মাটিচাপা দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। পুলিশ অডিও বার্তার সূত্র ধরে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।