সুন্দর ভবনে পরিত্যক্ত কক্ষ, কমেছে শিক্ষার্থী, ঢিমেতালে চলে কার্যক্রম

দিনাজপুর শিশু একাডেমিতে প্রশিক্ষণ ভবনের নিচতলায় প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ছড়া শোনাচ্ছেন শিক্ষকছবি: প্রথম আলো

দিনাজপুরে ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ মাঠের পশ্চিম প্রান্তে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ভবন। রাস্তার পাশে প্রাচীর ঘেরা তিনতলা প্রশাসনিক ভবনের সঙ্গে লাগোয়া পাঁচতলা একটি প্রশিক্ষণ ভবন সবার চোখে পড়বে। প্রাচীরের ভেতরে ছোট একটি মাঠ। মাঠের একদিকে শিশুদের জন্য দোলনা, টংঘরের আদলে দুটি স্লিপার ও দুটি ঢেঁকি। সব মিলিয়ে কোলাহলমুক্ত শান্ত পরিবেশ। তবে বাইরে থেকে যতটুকু চকচকে দেখায়, ভেতরের চিত্র ঠিক তার উল্টো।

একদিকে জনবল–সংকট, ভবনের ভেতরে পরিত্যক্ত কক্ষ, শিশুশিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় উপকরণসামগ্রী না থাকা এবং শিক্ষার্থীসংখ্যা কমে যাওয়ায় ঢিমেতালে চলছে শিশু একাডেমির কার্যক্রম। বিভিন্ন দিবস ঘিরে স্বল্প বাজেটে শিশুশিক্ষার্থীদের কবিতা আবৃত্তি, সংগীত, নৃত্য আর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ঘিরেই ঘুরপাক খাচ্ছে শিশুরা।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শিশুরা বহুমাত্রিক আনন্দের মধ্যে থাকতে পছন্দ করে। তাদের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান শিশু একাডেমি। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও শিশুদের উপযোগী করে শিশু একাডেমিকে গড়ে তোলা যায়নি।

গত বৃহস্পতিবার ভেতরে ঢুকে প্রশিক্ষণ ভবনের নিচতলার করিডরে ১২-১৪ জন অভিভাবককে দেখা গেল। নিচতলার একটি কক্ষে শিশু বিকাশ শ্রেণির ১১টি শিশুকে ছড়া শোনাচ্ছেন শিক্ষক আলিফা আক্তার। পাশের কক্ষে প্রাক্‌-প্রাথমিকের শিশুদের গোলাকারভাবে বসিয়ে গল্প বলছেন শিক্ষক রোমানা আক্তার।

রোমানা আক্তার বলেন, ‘বাংলাদেশ শিশু একাডেমি কর্তৃক শিশুদের গল্প বলা, ছড়া, কবিতা, সংখ্যা গণনা, ছবি দেখে শেখা ও বলা বিষয়ে নির্ধারিত সিলেবাস আছে। এক বছর ধরে শিশুদের এসবই শেখানো হয়। এ ছাড়া কিছু খেলাধুলার উপকরণ আছে। পড়ানো শেষে খেলনার উপকরণ দেওয়া হয়। সপ্তাহের ৫ দিন সকাল ১০টা থেকে ক্লাস শুরু হয়। চলে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। পরে আধা ঘণ্টা বাইরের মাঠে স্লিপার, দোলনা, ঢেঁকি এগুলোতে খেলাধুলা করে শিশুরা। দুপুর ১২টায় ছুটি হয়।

সাড়ে তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের শিশু একাডেমিতে শিশু বিকাশ ও প্রাক্‌-প্রাথমিক শাখায় ভর্তি করান অনেক অভিভাবক। সুইটি আক্তার নামের একজন অভিভাবক বলেন, ‘বাচ্চার বয়স চার বছর। এখানে ভর্তি করাইছি চার মাস হলো। আগে বাচ্চাটা কারও সঙ্গে কথা বলত না, মিশতে চাইত না। এখানে ভর্তি করানোর পর ক্লাসে তার পাশে বসে থাকতে হতো। এখন একা একা ক্লাসে বসে। ছড়া বলতে পারে।’

পরে আরও কয়েকজন অভিভাবক বলেন, অবকাঠামোগত কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু কেন জানি দিন দিন শিশু একাডেমিতে শিক্ষার্থীসংখ্যা কমছে। তাঁদের মতে, শিশুর মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে নতুন কিছু নেই। এ কারণে শিশুদের সঙ্গে অভিভাবকদেরও আগ্রহ কমছে। এ ছাড়া বাড়িতে মুঠোফোনে ভিডিও দেখার নেশা বাড়ছে শিশুদের।

সিসিমপুর প্রকল্প শেষ। দিনাজপুর শিশু একাডেমির প্রশিক্ষণ ভবনের নিচ তলায় সেই প্রকল্পের পরিত্যক্ত ভ্যানগাড়ি
ছবি: প্রথম আলো

কথা হয় দিনাজপুর শিশু একাডেমিতে কর্মরত মজনুর রহমানের সঙ্গে। তিনি লাইব্রেরিয়ান কাম মিউজিয়াম কিপার। আলাপচারিতায় জানান, ২০০৬ সালের মার্চে ৭১ শতাংশ জায়গায় দিনাজপুর শিশু একাডেমি কমপ্লেক্সটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১২ কক্ষবিশিষ্ট পাঁচতলা একটি প্রশিক্ষণ ভবন এবং লাগোয়া তিনতলা–বিশিষ্ট (অর্ধবৃত্তাকার) প্রশাসনিক ভবনসহ ৫০০ আসনের মিলনায়তন। এখানে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৫। বর্তমানে কর্মরত আছেন দুজন। ঝাড়ুদার নেই, দিন হাজিরার ভিত্তিতে নৈশপ্রহরী আছেন একজন। খোদ জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তার পদটিও শূন্য। চলতি দায়িত্ব পালন করছেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা আবদুল ওয়াহেদ। সপ্তাহের ২-৩ দিন দিনাজপুরে আসেন তিনি। এ ছাড়া চুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষক আছেন ১০ জন এবং শিশু বিকাশ ও প্রাক্‌-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে অস্থায়ী শিক্ষক দুজন।

দিনাজপুর শিশু একাডেমিতে প্রশিক্ষণ ভবনের তৃতীয় তলায় আছে গ্রন্থাগার। এখানে বই পড়তে আসেন না কেউ
ছবি: প্রথম আলো

রেজিস্ট্রার দেখে মজনুর রহমান জানান, এ বছর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি ও উপস্থাপনা, সংগীত, নৃত্য, হাতের লেখা বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে ৯৩ জন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ একাধিক বিষয়ে ভর্তি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এক বছরের জন্য ফি দিতে হয় দেড় হাজার টাকা। তবে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত ম্যাগাজিনের জন্য অতিরিক্ত ৩০০ টাকা ফি নেওয়া হয়। ২০১৭ সালে এসব বিষয়ে শিক্ষার্থী শিশু ছিল আড়াই শতাধিক।

কারণ ব্যাখ্যা করে মজনুর রহমান বলেন, ‘করোনার পর থেকে শিশু কমতে শুরু করে। তা ছাড়া একাডেমি শহরের এক কোনায় হওয়ার কারণে অভিভাবকেরা শিশুদের নিয়ে আসতে চান না।’ এই কথার সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, শহরে অগ্নিলা নৃত্য একাডেমি, তা-থৈ নৃত্য একাডেমি, নবরূপী সুরবাণী, পল্লব নৃত্যবিতান ও জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এসব বিষয়ে শিক্ষার্থী আছে তিন শতাধিক।

কেন ঝিমিয়ে পড়ছে শিশু একাডেমির কার্যক্রম

শিশু একাডেমির বার্ষিক অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে বিজয় দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, শিশু দিবস, স্বাধীনতা দিবস, পয়লা বৈশাখ, শিশু অধিকার সপ্তাহ, ঈদে মিলাদুন্নবী, রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী। এসব দিবসে কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের পুরস্কার দেওয়া ও আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। মজনুর বলেন, এর বাইরে আগে কয়েকটি দিবস পালন করা হতো। তবে জুলাই অভ্যুত্থানের পর ওই দিবসগুলোর আয়োজন বন্ধ। বরাদ্দও নেই। একেকটি অনুষ্ঠান আয়োজনে বরাদ্দ থাকে ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা। তবে এবার পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল।

শিশু একাডেমি হবে শিশুদের আনন্দের তীর্থস্থান, কিন্তু গতানুগতিকতার বাইরে শিশুদের মনোবৃত্তি বিকাশে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে এই প্রতিষ্ঠান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অভিভাবকেরা, এমনটাই মত এখানকার কয়েকজন প্রশিক্ষকের। আবৃত্তি প্রশিক্ষক শেখ ছগীর আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা যাঁরা প্রশিক্ষক আছি, ক্লাসপ্রতি সম্মানী দেওয়া হতো ২০০ টাকা। সম্প্রতি সেটা বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করা হয়েছে। তাও ক্লাসে ৩০ জনের বেশি শিক্ষার্থী থাকলে সেটা পাওয়া যায়। অনেক প্রশিক্ষকই আগ্রহ হারিয়েছেন। এখানে অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি নতুন নতুন কর্মসূচি নেওয়া উচিত। মেলার আয়োজন করা, শিশুদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন বিষয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা, সর্বোপরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিশু একাডেমির কার্যক্রমগুলো চালু করা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে শিশু একাডেমিতে ভর্তির ব্যবস্থা করা উচিত।’

দিনাজপুর শিশু একাডেমি ভবনের বাইরের মাঠে খেলার ব্যবস্থা আছে
ছবি: প্রথম আলো

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী প্রমোথেশ শীল বলেন, ‘ছোটবেলায় কত রকমের অনুষ্ঠান দেখেছি এখানে! তখন তো এত বড় ভবনও ছিল না। এখন সেই অর্থে কোনো অনুষ্ঠানাদিও চোখে পড়ে না। শিশুদের কার্যক্রমের দিকে নজর নেই। অথচ মিলনায়তনটিতে নানান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। শিশুদের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার আতুঁড়ঘর হতে পারে এই শিশু একাডেমি।’

একই কথা বলছেন এখান থেকে সদ্য বদলি হওয়া শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘শিশুরা সব সময় নতুন কিছুর সঙ্গে থাকতে চায়। আমরা সেটা দিতে পারি না। এমনকি মানসম্মত খেলনার উপকরণগুলোও নয়।’ এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘সিসিমপুর’ নামে একটি প্রকল্প ছিল। এর আওতায় বিভিন্ন এলাকায় শিশুদের প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হতো। এখন সেটা বন্ধ। শিশুদের জন্য কোনো গবেষণা সেল নেই। একজন শিশুবিষয়ক কর্মকর্তার পক্ষে একটি মোটরসাইকেলে পুরো জেলায় এর কর্মসূচি বিস্তার করা সহজ কাজ নয়। শিশু একাডেমি পরিচালনায় ১৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির ১১টি সরকারি কর্মকর্তাদের। এখানে সংস্কৃতিমনা মানুষের অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

পরিত্যক্ত কক্ষ, নামেমাত্র লাইব্রেরি ও মিউজিয়াম

বর্তমানে পাঁচতলা ভবনটির নিচতলায় দুটি কক্ষে সকালে শিশু বিকাশ ও প্রাক্‌-প্রাথমিকের পাঠদান হয়। বিকেলে একটি কক্ষে আবৃত্তি ও অপরটিতে সুন্দর হাতের লেখা ক্লাস হয়। দ্বিতীয় তলার তিনটি কক্ষে বিকেলে সংগীত, নৃত্য ও চিত্রাঙ্কন বিভাগের পাঠদান চলে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত মোট ৬টি কক্ষ পরিত্যক্ত। মেঝেতে ধুলার আস্তরণ পড়েছে। কক্ষগুলোতে একটি করে আলমারি (অব্যবহৃত) রাখা হয়েছে। এসব কক্ষে এখন পোকামাকড়ের ঘরবসতি। শুধু তা–ই নয়, চতুর্থ তলা থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত অকেজো হয়ে আছে বিদ্যুৎসংযোগ লাইন। প্রতিটি টয়লেটের ফ্ল্যাশ ও প্যানগুলো ভেঙে আছে। সেখানেও পোকামাকড়ের অবাধ বিচরণ। ভবনটিতে লিফট থাকলেও সেটি পরিত্যক্ত।

দিনাজপুর শিশু একাডেমি প্রশিক্ষণ ভবনের তৃতীয় তলার করিডোরের চিত্র
ছবি: প্রথম আলো

প্রশাসনিক ভবনের নিচতলার করিডরে বসে অফিসের কার্যক্রম চালান মজনুর রহমান। যদিও এই ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি–সংলগ্ন অফিস সহকারীর একটি কক্ষ আছে। পাশেই শিশুবিষয়ক কর্মকর্তার কক্ষ। অপেক্ষাকৃত ঝকঝকে। দ্বিতীয় তলায় দেখা গেল লাইব্রেরি কক্ষ। সেখানে আলমারির তাকে ধুলার চাদর। বসে বই পড়ার মতো দারুণ সব ব্যবস্থা থাকলেও চেয়ার-টেবিলে জমে থাকা ময়লা-ধুলা থেকে সহজেই অনুমেয়, এখানে কালে-ভদ্রে কেউ প্রবেশ করেন। মজনুর জানান, তিনি মূলত এই শাখার দায়িত্বে। লোকবল না থাকায় প্রায় সব কাজ তাঁকেই করতে হয়। এখানে বসে বই পড়বেন, এমন কেউ আসেন না। তবে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ থেকে শিক্ষার্থী এবং অনেক অভিভাবক আসেন বই কিনতে। রেজিস্ট্রার দেখে জানান, গত পাঁচ বছরে এখান থেকে বই বিক্রি হয়েছে ৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকার।

তৃতীয় তলার একটি কক্ষের দরজায় লেখা মিউজিয়াম। ভেতরে দেখা গেল, ছোট ছোট দুটি কাচের বাক্স। কাচও ভাঙা। একটি বাক্সে মাটির তৈরি কয়েকটি জিনিসপত্র। কক্ষের এক কোণে পরিত্যক্ত কয়েকটি সিলিং ফ্যানসহ অন্যান্য জিনিসপত্র। আপাতদৃষ্টে মনে হবে মিউজিয়াম নয়, যেন একটি স্টোর রুম!

সংস্কার নেই শিশু একাডেমির মিলনায়তনটির

প্রশাসনিক ভবনে দ্বিতলবিশিষ্ট মিলনায়তনটির আসনসংখ্যা ৫০০। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মসূচিতেও মিলনায়তনটির ব্যবহার হয়। পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক সেটির ভাড়াও নির্ধারণ করেছেন ভ্যাটসহ ৫ হাজার ৭৫০ টাকা। সর্বশেষ ১৫-১৭ এপ্রিল মিলনায়তনে হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ। তবে মজনুর বলেন, ‘কেউ ভাড়া দেয়, কেউ ডিসি স্যারের কাছ থেকে ভাড়া মওকুফ করে নেন। অনুষ্ঠান শেষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য যে খরচটা, এটাও অনেকেই দেন না।’

দিনাজপুর শিশু একাডেমিতে প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় পরিত্যক্ত মিউজিয়াম কক্ষ। কয়েকটি আলমিরা থাকলেও নেই কোনো উপকরণ
ছবি: প্রথম আলো

মিলনায়তন ঘুরে দেখা যায়, মঞ্চের প্রায় সব লাইট নষ্ট হয়েছে। সেখানে সাধারণ কয়েকটি বৈদ্যুতিক বাতি লাগিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। ৪টি ফ্যান অকেজো হয়ে পড়েছে। বায়ুনির্গমন ফ্যানগুলোও নষ্ট। কয়েকটি আসনও বসার অনুপযোগী।

এসব বিষয়ে দিনাজপুর শিশু একাডেমির শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা আবদুল ওয়াহেদ (চলতি দায়িত্বে) বলেন, ‘আমি চলতি দায়িত্বে আছি। সরকার যখন যেটা প্রোগ্রাম দেয়, আমরা সেটি বাস্তবায়ন করি। তবে দিনাজপুর শিশু একাডেমির কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বুদ্ধ করতে আমরা কাজ করছি।’

এ বিষয়ে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এসএম হাবিবুল হাসান বলেন, ‘শিশু একাডেমির কার্যক্রমকে ঢেলে সাজাতে আমরা কাজ করছি। ইতিমধ্যে কিছু ফার্নিচার ও সংস্কারকাজের জন্য একটি প্রস্তাব প্রস্তুত করে দিনাজপুর এলজিইডিতে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই এসব বিষয়ের সমাধান হবে।’