আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্তে ‘দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায়’ ক্ষোভ বড় ভাইয়ের

আবু সাঈদ হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার ও আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকেছবি: প্রথম আলো

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ১০ মাস পার হলেও মামলার তদন্তে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর বড় ভাই আবু হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ। যার আত্মত্যাগের কারণে কোটা সংস্কার আন্দোলন পরবর্তী সময়ে গণ–অভ্যুত্থানে রূপ নেয়, দেশ ফ্যাসিস্ট–মুক্ত হয়; সেই আবু সাঈদের হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য আজ আবু সাঈদের পরিবার ও সহযোদ্ধাদের মানববন্ধনে দাঁড়াতে হয়, এটা আমাদের জন্য লজ্জার।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আবু সাঈদ হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার ও আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে আবু হোসেন এ কথাগুলো বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

আবু হোসেন অভিযোগ করেন, পুলিশের নির্দেশদাতা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসামি হলেও তাঁরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারছেন, তাঁরা নিজ নিজ কর্মস্থলে বহাল তবিয়তে আছেন। এটার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। আবু সাঈদ হত্যা মামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যাঁরা জড়িত, তাঁদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান আবু হোসেন।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির সদস্যসচিব রহমত আলী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সমন্বয়ক শামসুর রহমান, আমির আলী প্রমুখ।

রহমত আলী বলেন, ‘আবু সাঈদ শহীদ হওয়ার ১০ মাস হলেও খুনিরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, আপনারা আমাদের অনেকবার আশ্বস্ত করেছেন, কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি আবু সাঈদের হত্যায় জড়িত সেই পুলিশ এখনো ইউনিফর্ম পরে কর্মরত অবস্থায় আছে।’

গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন। একই বছরের ১৮ আগস্ট আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী।