ফতুল্লায় লঞ্চের ধাক্কায় বাল্কহেড ডুবে নিখোঁজ দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় অর্ধনিমজ্জিত বালুবাহী বাল্কহেডে আটকে থাকা দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। আজ শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে আজ সকাল ছয়টার দিকে ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ ফিলিং স্টেশনের সামনে এক বেসরকারি ডকইয়ার্ডের ঘাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার চরগরবদী গ্রামের আমির হাওলাদারের ছেলে শাকিল আহমেদ (২৪) এবং ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর এলাকার মোহাম্মদ হাসান (২০)। তাঁরা দুজনই বাল্কহেডের লস্কর ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ এলাকায় মাটিবোঝাই ‘কাশফা স্নেহা’ বাল্কহেডটি ওই ঘাটে নোঙর করা ছিল। আজ সকাল ছয়টার দিকে ঢাকামুখি যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘সুন্দরবন-১৬’ নদীর তীরে নোঙর করা বাল্কহেডটির পেছনের দিকে (কেবিন সাইটে) আঘাত করে। ধাক্কার তীব্রতায় বাল্কহেডটি দুমড়েমুচড়ে দ্রুত তলিয়ে যেতে শুরু করে। এ সময় বাল্কহেডের ওপর থাকা তিন শ্রমিক সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন, তবে কেবিনে ঘুমিয়ে থাকা দুজন শ্রমিক নিখোঁজ থাকেন। ধাক্কা দেওয়ার পর লঞ্চটি ঢাকার দিকে চলে যায়। ঘটনার পর নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর সদস্যরা উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে টানা কয়েক ঘণ্টার অভিযানে কেবিনের মধ্য থেকে ওই দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, বাল্কহেডের ইঞ্জিন রুমের গ্রিল কেটে কেবিন থেকে ওই দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক কামরুল হাসান জানান, লঞ্চের ধাক্কায় বাল্কহেডের ইঞ্জিন রুম দুমড়েমুচড়ে যায় এবং সেখানে ঘুমিয়ে থাকা দুই লস্কর ইঞ্জিন রুমে আটকে যান। ভেকু দিয়ে ইঞ্জিন রুমের প্রবেশপথ ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে নিখোঁজ দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় নিখোঁজ দুজনের মরদেহ উদ্ধারের পর তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ফয়েজ উদ্দিন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী লঞ্চটি আটক করা হয়েছে। দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।