লোকালয়ে চলে আসা নীলগাইকে সুরক্ষা দিতে মসজিদে মাইকিং

মানুষের তাড়া খেয়ে নীলগাইটি এদিক–সেদিক ছোটাছুটি করছে। আজ সকালে বিরল উপজেলার কামদেবপুর এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

কখনো শালবনে, কখনো আশপাশের খেতখামারে অস্থিরভাবে ঘোরাঘুরি করছে একটি নীলগাই। চঞ্চলতা বলে দেয়, সঙ্গীদের ছেড়ে কিংবা দলছুট হয়ে পড়েছে নীলগাইটি। বিরল প্রজাতির এই প্রাণী স্থানীয় লোকজনের নজরে পড়লে অনেকেই তাড়া করে ধরার চেষ্টা করেন। এ সময় দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি করতে শুরু করে নীলগাইটি। খবর পেয়ে বন বিভাগের পক্ষ থেকে নীলগাইটিকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য স্থানীয় লোকজনকে সচেতন করতে ওই এলাকার মসজিদের মাইকে প্রচারণা চালানো হয়েছে।

মাইকে বলা হয়েছে, ‘শালবনের আশপাশে একটি নীলগাইকে ঘুরতে দেখা গেছে। এটি একটি শান্ত স্বভাবের বন্য প্রাণী, মানুষের কোনো ক্ষতি করে না। তাই প্রাণীটিকে অহেতুক বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকবেন। যদি কেউ প্রাণীটির ক্ষতি করেন, তাহলে পরবর্তী সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আজ শনিবার দুপুরে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের কামদেবপুর কালিয়াগঞ্জ শালবন এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এর আগে সকাল থেকে নীলগাইটিকে ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন কামদেবপুর ও ধর্মপুর এলাকার লোকজন। ধর্মপুর এলাকার কৃষক আবুল হোসেন বলেন, সকালে বোরোখেতে পানি দেওয়ার জন্য তিনি যাচ্ছিলেন। বনের পাশে লোকজনের ভিড় দেখে তাঁদের কাছে যান। পরে কিছুটা দূরে একটি নীলগাইকে দেখতে পান তিনি। মানুষের তাড়া খেয়ে এদিক–ওদিক ছুটতেছিল এটি। এ সময় বন বিভাগের বিট কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে তিনি বিষয়টি জানান।

বন বিভাগের ধর্মপুর বিট কর্মকর্তা মহসিন আলী বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে ফোন পেয়ে ওই এলাকায় যাই। নীলগাইটিকে নিজের চোখেও দেখেছি। দলছুট হয়ে অস্থিরভাবে চলাফেরা করছিল। পরে কামদেবপুর ও ধর্মপুর এলাকার মসজিদগুলোতে প্রচারণা চালাই। নীলগাইটির যেন কোনো ক্ষতি না করা হয়, এ জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করা হয়েছে। কেউ যদি প্রাণীটা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়, তাহলে সেটি বনে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বন বিভাগ।’

নীলগাইটির সুরক্ষায় আছেন বিজিবি এনায়েতপুর বিওপি ক্যাম্পের সদস্যরাও। ক্যাম্প কমান্ডার সফিকুল ইসলাম বলেন, সকালে বেশ কিছু মানুষ নীলগাইটিকে তাড়া করেছেন। বিষয়টি দেখে উৎসুক মানুষকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নীলগাইটি বনের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। এটি যেন সুরক্ষা পায়, কেউ যেন ক্ষতি করতে না পারেন, সে জন্য তাঁরাও খেয়াল রাখছেন।