মুক্তাগাছায় দলীয় নির্দেশনা ও ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের একাংশের মিছিল

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান হত্যার বিচার দাবিতে মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা। আজ দুপুরে পৌর শহরের আটানি বাজার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আপাতত কোনো ধরনের মিছিল বা সমাবেশ না করার নির্দেশনা দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। গতকাল রোববার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন মৌখিকভাবে এ নির্দেশনা দেন।

এদিকে আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মুক্তাগাছা পৌর শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান হত্যার বিচার দাবিতে শহরে মিছিল করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা-কমীরা।

এহতেশামুল আলম আজ মুঠোফোনে বলেন, ‘যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান মূলত চাঁদাবাজি নিয়ে বিরোধের জেরে খুন হয়েছেন। অথচ এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজনৈতিক দলাদলি সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে মিছিল বা সমাবেশ করলে এলাকার পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। এতে সাধারণ মানুষের শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে। এ কারণে আমরা আপাতত মুক্তাগাছা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনগুলোকে মিছিল–সমাবেশ না করতে বলেছি। পাশাপাশি প্রশাসনকেও অনুরোধ করেছি এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার।’

গত ২৮ আগস্ট রাতে মুক্তাগাছা উপজেলায় যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামানকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম ওরফে মনিকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়। আসাদুজ্জামান হত্যার বিচার দাবি করে মুক্তাগাছা পৌর শহরে একাধিকবার মিছিল করে আওয়ামী লীগের একটি অংশ। ওই মিছিল থেকে দলের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়।

আজ ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও আসাদুজ্জামান হত্যার আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মুক্তাগাছা পৌর শহরে মিছিল করে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ। পরে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাধা দিলে কর্মসূচি শেষ করা হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ ঘোষ বলেন, ‘মিছিলে অংশ নিতে এক হাজারের বেশি মানুষ পৌর শহরে এসেছে। পরে আমরা মিছিল শুরু করলে প্রশাসন ও পুলিশ বাধা দেয়। আমরা আসাদুজ্জামান হত্যার বিচার চাই। আসামিদের গ্রেপ্তার দাবি করছি। মিছিলে মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাই আকন্দসহ আওয়ামী লীগের একাংশের নেতারা অংশ নেন।’
মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম লুৎফর রহমান বলেন, ‘১৪৪ ধারার মধ্যে মিছিল করতে চেষ্টা করলে আমরা বাধা দিই।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের বিরোধের জের ধরে যুবলীগেও বিরোধের সৃষ্টি হয়। বিরোধের জের ধরে পরিবহনের চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আসাদুজ্জামানকে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাই আকন্দ। তিনি আসাদুজ্জামান হত্যার জন্য দলের প্রতিপক্ষকে দায়ী করেন। গতকাল রোববার ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র বিল্লাল হোসেন সরকার। তিনি ওই হত্যা মামলার আসামি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল আলমের শ্বশুর।