৭ দিন পর পুলিশ জানাল, মামলার বাদী বাবাই মেয়েকে হত্যা করেছেন

রংপুর জেলার মানচিত্র

সপ্তাহখানেক আগে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার তালুক ঈশাদ নয়াটারি গ্রামে মাটি খুঁড়ে অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর অর্ধগলিত লাশ দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে পীরগাছা থানা থেকে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তখন তরুণীর বাবা থানায় গিয়ে লাশ শনাক্ত করে বলেন, লাশটি তাঁর নিখোঁজ মেয়ের। এরপর অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।

মামলার সাত দিনের মাথায় পুলিশ জানিয়েছে, লিপি বেগম (২২) নামের ওই তরুণীকে হত্যা করেছিলেন তাঁর বাবা রফিকুল ইসলাম নিজেই। মেয়ের ‘অসামাজিক কার্যকলাপে’ অতিষ্ঠ হয়ে তাঁকে খুন করে লাশ পুঁতে রাখেন বলে বাবা পুলিশকে বলেছেন। লিপির বাবা বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। রফিকুল বর্তমানে কারাগারে আছেন।

গতকাল সোমবার রাতে রংপুর জেলার সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এসব তথ্য জানান।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন বলেন, গত ২৫ জুলাই দুপুরে পীরগাছা উপজেলার তালুক ঈশাদ নয়াটারি গ্রামে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির কাছে সমতল জমিতে উঁচু জায়গা দেখে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হয়। পরে মাটি খুঁড়ে ওই তরুণীর মাথা দেখতে পান লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটির নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করে থানা নিয়ে যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আলমের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য অনুযায়ী, পুলিশের কাছে লিপি বেগমের বাবা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে বিবাহবিচ্ছেদের পর অস্বাভাবিক জীবন শুরু করেন। মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন তিনি। গত ২২ জুলাই শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে লিপিকে ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসরোধে হত্যা করেন তিনি। এরপর সেই লাশ টেনে নিয়ে একটি জমিতে পুঁতে রাখেন। মেয়ের প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে বাবা এ কাজ করেছেন বলে দাবি তাঁর।

পুলিশ জানায়, হত্যা ও লাশ গুমে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। রফিকুলকে হত্যা মামলার আসামি করে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় আদালতে পাঠানো হলে সেখানে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর রাতেই তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।