প্রকৌশলীকে ‘লাঞ্ছিত করা’ বিএনপির সেই নেতাকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি

বিএনপি থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত হওয়া মোল্লা সোহাগ
ছবি: সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) এক নির্বাহী প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠা খুলনা নগরের খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় খুলনা বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম (মনা) ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলমের (তুহিন) বরাত দিয়ে বিএনপির মিডিয়া সেল খুলনার আহ্বায়ক মিজানুর রহমান জানান, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মোল্লা সোহাগকে দলীয় পদ, প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্তে মহানগর বিএনপির নেতা বেগম রেহানাকে আহ্বায়ক করে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার সন্ধ্যায় খুলনা নগরের খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগের বিরুদ্ধে কুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) শেখ আবু হায়াতকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এর আগে মোল্লা সোহাগের কাছ থেকে মারধরের হুমকি পেয়ে কুয়েট উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) শেখ আবু হায়াত ও মো. গোলাম কিবরিয়া। গত রোববার মুঠোফোনে মোল্লা সোহাগের কাছ থেকে হুমকি পাওয়ার পর সোমবার উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ওই দুই প্রকৌশলী।

কুয়েটের উপাচার্যের কাছে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী লিখিত অভিযোগে বলেছিলেন, কুয়েটের ১৩ নম্বর ভবনের কাজের ছাদের ওয়াটার প্রুফিংয়ের কাজ করছেন মোল্লা সোহাগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের প্রকৌশলীরা বাজারদরের সঙ্গে সরকারি নিয়মানুযায়ী ভ্যাট, আইটি ও ১০ শতাংশ প্রফিট (দাপ্তরিকভাবে পূর্বনির্ধারিত) যুক্ত করে ওই কাজের দর নির্ধারণ করেন। ১০ শতাংশ প্রফিটে আপত্তি ঠিকাদার মোল্লা সোহাগের। তাঁকে আরও বেশি প্রফিট দিতে হবে বলে মুঠোফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়াকে বলেন। এ কথা বলার পর প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে ফোনেই নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল এবং মেরে ফেলার হুমকি দেন মোল্লা সোহাগ।

তবে ঠিকাদারির কোনো কাজ করেন না বলে দাবি করেছিলেন মোল্লা সোহাগ। তিনি বলেন, ‘কুয়েট হচ্ছে থানা বিএনপির সেক্রেটারি আব্বাসের নিয়ন্ত্রণে। আর বাদামতলার ওপাশে থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানের নিয়ন্ত্রণে। আপনি যদি প্রমাণ দেখাতে পারেন কুয়েটে আমার একটা টাকার কাজ আছে, তাহলে যা বলবেন মেনে নেব। এখানে কাজও করে আব্বাস, হুমকি দেয় ওরা, জোর–জুলুম করে ওরা। আমার নেতার অর্ডার আছে, আমি কখনো টেন্ডারে যাই না, কোনো ঠিকাদারিতে যাই না, কোনো জায়গাতেই যাই না।’

মোল্লা সোহাগের এ বক্তব্য সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।