রংপুরের গঙ্গাচড়া
সড়কের পাশে বিদ্যালয়, ঝুঁকিতে শিশুশিক্ষার্থীরা
বিদিতর আহম্মদীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি তুলশিরহাট-সয়ড়াবাড়ি সড়ক ঘেঁষে অবস্থিত।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বিদিতর আহম্মদীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি তুলশিরহাট-সয়ড়াবাড়ি সড়ক ঘেঁষে অবস্থিত। বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর নেই। সড়কের ধারে মাঠে শিশু শিক্ষার্থীরা খেলাধুলাসহ ছোটাছুটি করে। এতে শিশু শিক্ষার্থীদের সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ার আশঙ্কা করছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ অভিভাবকেরা।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের দাবি, সড়কের ধার দিয়ে স্কুলের সীমানাপ্রাচীর দ্রুত নির্মাণ করা দরকার। অন্যথায় স্কুল মাঠে ফুটবল কিংবা ক্রিকেট বল নিয়ে খেলাধুলা করার সময়ে শিশুরা সড়কে বড় ধরনের দুর্ঘটনায় পড়তে পারে।
১৯৭১ সালে উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়ন পরিষদের ৪০ শতাংশ জমিতে ওই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে সেখানে পাঁচজন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭৩। বিদ্যালয়ের পাশে তুলশিরহাট-সয়ড়াবাড়ি সড়কে প্রতিদিন অসংখ্য হালকা ও ভারী যান চলাচল করে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা জানান, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও তুলশিরহাট-সয়ড়াবাড়ি সড়কটি একসঙ্গে লাগানো। সীমানাপ্রাচীর না থাকায় শিশুরা স্কুল মাঠে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার সময়ে বল সড়ক পেরিয়ে যায়। শিশুরা কোনো কিছু না বুঝেই সেই বল দৌড় দিয়ে সড়ক থেকে আনতে যায়। এভাবে বল আনতে গিয়ে ইতিপূর্বে পাঁচ শিশু অটোরিকশার ধাক্কায় আহত হয়েছে। সড়কের ধার দিয়ে স্কুলের সীমানাপ্রাচীর দেওয়া হলে শিশু শিক্ষার্থীরা অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত থাকবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিরাপদ যাতায়াতের জন্য স্কুল ভবনের পেছন দিয়ে বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা জরুরি দরকার। বিকল্প সড়কটি করা গেলে শিক্ষার্থীদেরকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তুলশিরহাট-সয়ড়াবাড়ি সড়ক পারাপার হয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হবে না।
ওই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নওরিন আফরোজ বলে, ‘আমরা টিফিনের সমায় ক্রিকেট খেলি। জোরে মারলে বল রাস্তায় যায়। তখন বল আনতে গিয়ে ভয় লাগে।’
একই শ্রেণির শিক্ষার্থী রবিউল সানি বলে, ‘স্কুলের মাঠে ফুটবল খেলাই। বল রাস্তার ওপারে যায়। একদিন বল আনতে গিয়ে রাস্তাত আমাকে অটো ধাক্কা দিছে।’
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আর্নিকা তাবাচ্ছুম বলে, ‘মাঠোত বল খেলাইলে রাস্তাত যায়। বল আনতে গিয়ে দুই দিন রিকশা ধাক্কা দিছে। মাঠে খেলার সমায় খুব ভয় লাগে।’
নজরুল ইসলাম নামের একজন অভিভাবক বলেন, ‘স্কুলটা রাস্তার ধারে। কিন্তু সীমানাপ্রাচীর নেই। বাচ্চারা টিফিনের সময় মাঠে খেলাধুলায় মগ্ন থাকে, দৌড়াদৌড়ি করে। অবুঝ শিশুরা কখন যে রাস্তায় গিয়ে বড় ধরনের বিপদে পড়ে, সেই ভয়ে থাকি।’
আরেক অভিভাবক সিদ্দিক হোসেন বলেন, ‘রাস্তার পাশে স্কুলটার একটা সীমানাপ্রাচীর দিতে সরকারের কত টাকা লাগে? রাস্তায় শিশুরা মারা যাওয়ার পরে কি প্রাচীর দেওয়া হবে?’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজাহার হোসেন শাহ বলেন, শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় মাঠে খেলাধুলা করে। সড়কটির কারণে খুব ভয় লাগে। মাঠ ও সড়ক একসঙ্গে রয়েছে। প্রাচীর থাকলে শিশুরা ঝুঁকিমুক্ত থাকবে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাগমা সিলভিয়া খাঁন বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সড়কের ধার দিয়ে একটা প্রাচীর নির্মাণ করা প্রয়োজন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় আছি।’