ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলে পাঠদান

আট বছর আগে কলেজের বিজ্ঞান ভবন ও প্রশাসনিক ভবনের দুটি কক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘদিনেও ভবনগুলো সংস্কার করা হয়নি।

দুর্ঘটনা এড়াতে জামালপুরের মেলান্দহ সরকারি কলেজের ভবনের একটি কক্ষের ছাদে বাঁশ দিয়ে ঠেকনা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি তোলা ছবি
প্রথম আলো

দূর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, দুটি ভবন জরাজীর্ণ। তবে বাইরের চেয়ে ভেতরের অবস্থা বেশি খারাপ। ছাদে ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে রড বের হয়ে আছে। ভবনের বিভিন্ন স্থানের ছাদে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ঠেকনা দেওয়া রয়েছে। দুটি ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ওই ভবনগুলোয় পাঠদান ও দাপ্তরিক কার্যক্রম চলছে। ব্যবহার অনুপযোগী এই ভবন দুটি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার সরকারি কলেজের।

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, চার একর জমির ওপর ১৯৭২ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৭ সালে কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। কলেজে উচ্চমাধ্যমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত দুই হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন।

ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় আট বছর আগে কলেজের বিজ্ঞান ভবন ও প্রশাসনিক ভবনের দুটি কক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এসব ভবনের কক্ষগুলোয় পাঠদান করতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, দক্ষিণ পাশে বিজ্ঞান ও পশ্চিম পাশে প্রশাসনিক ভবন। বিজ্ঞান ভবনের দোতলায় তিনটি শ্রেণিকক্ষ এবং নিচতলায় একটি শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাবের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বের হয়ে আছে। এসব কক্ষে বড় বড় ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। জানালা-দরজা ভাঙা। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। সেসব স্থানে রড বের হয়ে আছে। ভবনের বিমগুলোয় ফাটল ধরেছে। প্রশাসনিক ভবনের দুটি কক্ষে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ঠেকনা দেওয়া রয়েছে।

উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা বলে, কলেজের সব শ্রেণিকক্ষই জরাজীর্ণ। অবস্থা এমন যে আতঙ্কের মধ্যে ভবনে ক্লাস করতে হয়। অনেক সময় পাঠদান চলাকালীন ছাদের পলেস্তারা খসে শরীরে পড়ে। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়, কখন ছাদ ভেঙে পড়ে। প্রথম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলে, সামান্য বৃষ্টি হলেই ভবনের ছাদ ও দেয়াল চুইয়ে পানি পড়ে।

পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, ভবনগুলোরে অবস্থা এতই খারাপ যে এটি আর সংস্কার করা সম্ভব নয়। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে পাঠদান করতে হয়।

এসব বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ হাসান তৌফিক মো. আলী নূর বলেন, দুটি ভবন পুরোপুরি পরিত্যক্ত। ক্লাস চলাকালে ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে শিক্ষার্থীদের ওপর পড়ে। ফলে তারা ক্লাসে ঠিকমতো মনোযোগী হতে পারে না। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য তিনি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন।