দুই নতুন প্রার্থীর প্রচারণায় সরগরম পুরো এলাকা

জামালপুর-৫ (সদর) আসনে নির্বাচনী ময়দানে জমে উঠেছে দুই নতুন প্রার্থীর লড়াই। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ (নৌকা) ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রেজাউল করিম (ঈগল)—দুজনই নতুন। তাঁরা দুজন শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যাপক প্রচারণা। তাঁদের ঘিরে এখন সরগরম পুরো নির্বাচনী এলাকা।

দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রচারণা শুরু করেছেন দুই প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় ভোটারের দ্বারে দ্বারে ছুটে বেড়াচ্ছেন। ভোট প্রার্থনার পাশাপাশি প্রার্থীরা দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। ভোটাররাও তাঁদের নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করছেন।

আওয়ামী লীগের কর্মীরা বলেন, ১৯৯১ সালে এই আসনে বিএনপি জয় পেয়েছিল। এর পর থেকে আসনটি আওয়ামী লীগের দখলেই রয়েছে। এবার বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় আওয়ামী লীগের দুজন প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

গতকাল শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদর উপজেলার শরিফপুর বাজার, নান্দিনা, পৌর বাসস্ট্যান্ড, হরিপুর ও পৌর শহরের কয়েকটি এলাকায় স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই প্রার্থী দিনরাত প্রচারণা চালাচ্ছেন। পোস্টারে ছেয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকা। এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গারও করছে। হুমকিসহ চলছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ঘটনা। এতে ভোটের মাঠে দেখা দিয়েছে উত্তাপ।

ভোটাররা বলেন, উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে এই আসনে নৌকার জয়ের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চান আবুল কালাম আজাদ। আর দীর্ঘদিন ধরে দল থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী রেজাউল করিম বিজয়ী হতে মরিয়া। দুজনই তরুণ ভোটারদের প্রাধান্য দিচ্ছেন।

নৌকার প্রার্থী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠে প্রতিপক্ষকে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। নির্বাচনে প্রতিযোগিতা থাকবেই। সবচেয়ে বড় কথা, আসনটি নৌকার ঘাঁটি। যেখানেই যাচ্ছি ভোটারদের কথা একটাই, তাঁদের কাছে ভোট চাইতে হবে না, তাঁরা নৌকারই ভোটার। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কারণে চ্যালেঞ্জে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রেজাউল করিমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তাঁর ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর নির্বাচনের সমন্বয়কারী ইকরামুল হক প্রথম আলোকে বলেন,‘নৌকার সমর্থকেরা আমাদের কেন্দ্র ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নানা ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তাঁরা (নৌকা সমর্থক) আমাদের সমর্থকদেরও বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। ওই সব কারণে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা আছে। অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হলে তাঁদের প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন।’

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এই আসনে মোট সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বাকি পাঁচজন হলেন জাতীয় পার্টির মো. জাকির হোসেন (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু সায়েম মোহাম্মদ (ডাব), জাতীয় পার্টি (জেপি) মো. বাবর আলী খান (বাইসাইকেল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) মো. রফিকুল ইসলাম (আম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) মো. সাবিরুজ্জামান (একতারা)। সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত জামালপুর-৫ (সদর) আসন। এই আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ৪২ হাজার ৪৮০ জন।