রায়পুরায় পল্লী বিদ্যুতের অভিযোগকেন্দ্রে হামলা

নরসিংদী জেলার মানচিত্র
প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের একটি অভিযোগকেন্দ্রে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করেছেন একটি গ্রামের অর্ধশতাধিক বাসিন্দা।

গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে উপজেলার চরাঞ্চল চানপুর ইউনিয়নের সদাগরকান্দি গ্রামে অবস্থিত ওই অভিযোগকেন্দ্রে হামলার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, চানপুর ও বাঁশগাড়ি এ দুই ইউনিয়ন মিলিয়ে বিদ্যুতের মোট চাহিদা সাড়ে ছয় মেগাওয়াট। সাধারণ সময়ে ছয় মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ পেলেও এক মাস ধরে পাওয়া যাচ্ছে তিন থেকে সাড়ে তিন মেগাওয়াট। এতে স্বাভাবিকভাবে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না।

চানপুর পল্লী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের পাশেই ওই অভিযোগকেন্দ্রটি। উপকেন্দ্রের প্রধান মো. মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানীয় লোকজনের ধারণা, আমরা ইচ্ছা করে লোডশেডিং দিয়ে রাখি। এটা যে জাতীয় সমস্যা, তাঁরা সেটা নিজেরাও বুঝতে পারছেন না, আমরাও তাঁদের বোঝাতে পারছি না। ঘটনার পরপরই আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে ঘটনা জানিয়েছি। তাঁদের সহযোগিতায় রাত ১২টার দিকে কার্যালয়ে ফিরি আমরা। বর্তমানে সবাই আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

অভিযোগকেন্দ্রটিতে ইনচার্জসহ মোট তিনজন লাইনম্যান কাজ করেন জানিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি রায়পুরা জোনাল কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সবাই আতঙ্কে আছেন। অন্যত্র বদলি হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

এমন আচরণ দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন চানপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোমেন সরকার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাঁরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তাঁরা অবুঝ। লোডশেডিংয়ের কারণ যে তাঁরা নন, এটাও বুঝতে পারছেন না স্থানীয়রা। এই ঘটনায় এরই মধ্যে ইনচার্জের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা দেখব।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগে চানপুর, বাঁশগাড়িসহ কয়েকটি চরাঞ্চলে বিদ্যুতের লাইন নেওয়া হয়। এরপর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেয়ে আসছিলেন। তবে এক মাস ধরে অতিমাত্রায় লোডশেডিং হচ্ছে।

ওই অভিযোগকেন্দ্রের লাইনম্যানরা জানিয়েছেন, গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে এলাকায় লোডশেডিং চলছিল। ওই সময় স্থানীয় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই অভিযোগকেন্দ্রে আসেন। তাঁদের আসতে দেখে লাইনম্যানরা দরজা বন্ধ করে নিরাপদ স্থানে সরে যান।

‘এখনই বিদ্যুৎ দিতে হবে’ বলতে বলতে তাঁরা অভিযোগকেন্দ্রটির দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। ওই সময় বৈদ্যুতিক কাজে ব্যবহৃত কিছু রড, একটি সেলাই লেন্স, একটি প্লাস নিয়ে যান। একপর্যায়ে তাঁরা ইনচার্জ ও লাইনম্যানদের গালাগাল করতে করতে সেখান থেকে বেরিয়ে যান।