যশোরে এমএম কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতদের সংঘর্ষ, ক্যাম্পাসে উত্তেজনা

বহিরাগত ব্যক্তিদের হামলার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাইকেল মধুসূদন কলেজের ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেনছবি: প্রথম আলো

যশোরে সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগত লোকজনের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজন আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ সময় বহিরাগত ব্যক্তিদের আড্ডাস্থল কয়েকটি চায়ের দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে ক্যাম্পাসের আসাদ গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

বহিরাগত ব্যক্তিদের হামলার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কলেজের ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এতে শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসের মধুমঞ্চে মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান আছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার দিকে কলেজের শহীদ আসাদ হল এলাকায় সাগর নামের একজন বহিরাগতসহ দুজন ব্যক্তি প্রকাশ্যে ধূমপান করছিলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাঁদের ধূমপান করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে ওই শিক্ষার্থীদের মারধর করেন বহিরাগত দুজন। খবর পেয়ে আসাদ হল ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। একপর্যায়ে সেখানে হইচই শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর স্থানীয় খড়কি এলাকার বাসিন্দা সাগর তাঁর ৪০ থেকে ৫০ জন অনুসারীকে নিয়ে আসাদ হল লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। তখন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ধাওয়া দেন। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় ইটপাটকেলের আঘাতে অন্তত তিন শিক্ষার্থী আহত হন, তবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। দুই ঘণ্টা পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এরপর রাতে কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে আবার ক্যাম্পাসে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় মিছিলে থাকা লোকজনের হাতে পাইপ, লাঠি ও কাঠের বাটাম দেখা গেছে। এতে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন বলেন, ভাগনে সাগর নামের স্থানীয় এক যুবক সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে শহীদ আসাদ হলে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এতে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে, তবে পরিস্থিতি এখন শান্ত।

যশোর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান বলেন, দীর্ঘ সময়ে কলেজে ছাত্রলীগের ছত্রচ্ছায়ায় সাগর গ্যাং তৈরি হয়েছে। ছিনতাই, মাদক সেবন, বেচাকেনাসহ আশপাশের ছাত্রাবাসগুলোর সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরক্ত করা তাঁদের কাজ। আজ ক্যাম্পাসে কয়েকটি ছেলেকে মারধর করেন সাগর। এতে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সাগর ও তাঁর টোকাই ছেলেদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ খন্দকার এহসানুল কবির বলেন, আজ কলেজ ক্যাম্পাসে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান আছে। রাতে হামলার ঘটনার বিষয়ে এই অনুষ্ঠানের পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে। গতকাল রাতে পুলিশ এসে তথ্য নিয়ে গেছে।