মিয়ানমারের আরও ৫ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বাংলাদেশে

নাফ নদী পেরিয়ে টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা। রোববার সকালে
প্রথম আলো ফাইল ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফের খারাংখালী সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও পাঁচজন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁরা মিয়ানমারের নাকফুরা এলাকা থেকে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে ঠাঁই নেন।

এর আগে গতকাল সকালে খারাংখালী ও ঝিমংখালী সীমান্ত দিয়ে নয়জন অস্ত্রসহ বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে আরও পাঁচজন বিজিপি সদস্য পালিয়ে এসেছেন। একই দিন সকালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া নয়জনকে সীমান্তের একটি ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে গতকাল রাত সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নাগপুরা ও বলি বাজার এলাকায় থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল হামলা হয়েছে। বিকট বিস্ফোরণের শব্দ নাফ নদীর এপারে হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উত্তর পাড়া, লম্বাবিল, উনচিপ্রাং, কাঞ্জরপাড়া, হ্নীলা, মৌলভীবাজার, ওয়াব্রাং, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া, পুরান বাজারসহ কয়েকটি গ্রামে শোনা গেছে। ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটান সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। তবে আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার কোনো সীমান্তে কোনো ধরনের বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, রাতে সীমান্ত এলাকা দিয়ে মিয়ানমারের পাঁচজন বিজিপি সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আরও অর্ধশতাধিক বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য সীমান্তে অপেক্ষা করছেন।

আরও পড়ুন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিবির এক কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারে ভেতরে সংঘাতের কারণে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন। যাঁরা পালিয়ে আসছেন, তাঁদের বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখা হচ্ছে। তাঁদের স্বদেশে ফেরতের ব্যবস্থা করা হবে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) লড়াই-সংঘাত চলছে টানা দুই মাস ধরে। চলমান সংঘাতের কারণে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সদস্যরা কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। গত ৩০ মার্চ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিনজন সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এর আগে ১১ মার্চ আশ্রয় নেন দেশটির ১৭৭ জন বিজিপি ও সেনাসদস্য। তাঁরা সবাই নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১১ বিজিবি হেফাজতে রয়েছেন। এর আগে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।