দিনাজপুরে বিনোদনকেন্দ্রে মারধরের শিকার জবির ১১ শিক্ষার্থী ও এক শিক্ষক
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার একটি বিনোদনকেন্দ্রে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ১১ শিক্ষার্থী ও একজন শিক্ষক মারধরের শিকার হয়েছেন। রোববার সন্ধ্যার এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বিনোদন কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মচারীও।
আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে জবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন, জাহিদুল আলম, বিনয় কুমার, প্রান্ত, মোকছেদুল, সাকিব, ওমর ফারুক, বিনজন বসাক ও মামুনের নাম জানা গেছে। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, জবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ৭৩ জন শিক্ষার্থী চারদিনের শিক্ষাসফরে গত শনিবার উত্তরাঞ্চলে গেছেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ১০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তাঁরা উঠেছেন জয়পুরহাটের একটি আবাসিক হোটেলে।
শিক্ষাসফরে থাকা বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. মহিউদ্দিন বলেন, রোববার সফরের দ্বিতীয় দিনে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সমীক্ষার কাজ শেষে বিকেলে তাঁরা বিনোদনকেন্দ্র স্বপ্নপুরীতে যান। সেখান থেকে পৌনে ছয়টায় তাঁরা বের হয়ে জয়পুরহাটে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।বিনোদনকেন্দ্রের একটি রাইডে এক ছাত্রী তাঁর ব্যাগ ফেলে আসেন। পরে আরেক ছাত্রীকে নিয়ে তিনি ব্যাগ আনতে যান। এ সময় ওই রাইডের দায়িত্বে থাকা কর্মচারী তাঁদের উত্ত্যক্ত করেন। ওই দুই ছাত্রী বিষয়টি সহপাঠীদের জানালে তাঁরা প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে বিনোদনকেন্দ্রের কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান।
মো. মহিউদ্দিন বলেন, মারধর ঠেকাতে গিয়ে তিনিও হামলার শিকার হন। পরে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে। আহত শিক্ষার্থীদের প্রথমে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁদের দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মারধরের শিকার শিক্ষার্থী বিনয় কুমার বলেন, বিনোদনকেন্দ্রর কর্মচারীরা রড ও চেলা কাঠ দিয়ে তাঁদের উপর্যুপরি আঘাত করেছে।
দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ফয়সাল শাফি জানান, আহত দুজনের মাথায় গুরুতর জখম হয়েছে। একজনের মাথায় ১০টি ও আরেকজনের ১৭টি সেলাই দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বপ্নপুরীর মালিক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। তিনি শুনেছেন তাঁর সাত-আটজন কর্মচারী আহত হয়েছেন। দুই পক্ষের আহত ব্যক্তিদের পুলিশ নিয়ে গেছে। এখন পুলিশ যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মমিনুল করিম বলেন, একটি ব্যাগের মালিকানা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিনোদনকেন্দ্রের এক কর্মচারীর কথা–কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনায় ১১ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।