চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানির মামলায় আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার, মালামাল উদ্ধার
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন ঢাকার আশুলিয়ার ধানশোনা এলাকার পলাশবাড়ীর মো. আলমগীর (৩৪) ও তাঁর ছোট ভাই রাজিব হোসেন (২১)। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট পাঁচজন গ্রেপ্তার হলো।
পুলিশ সুপার বলেন, আলমগীর হোসেনকে গতকাল সোমবার নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার সাধুরপাড়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আন্তজেলা ডাকাত দলের ‘মূলহোতা’। এর আগে এই ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদকালে তাঁর দেওয়া তথ্যানুযায়ী গতকাল সোমবার দুপুরে আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে বাস ডাকাতির সময় লুট করা নগদ ৪ হাজার ২১০ টাকা ও দুটি রুপার আংটি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর আলমগীর পুলিশকে জানান, বাসে ডাকাতির সময় লুট করা মুঠোফোন, গয়না ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ছুরি তাঁর ছোট ভাই রাজিবের কাছে রয়েছে। পরে সোমবার সন্ধ্যায় আলমগীরকে সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে রাজিব হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ডাকাতি করা ১০টি মুঠোফোন, ইমিটেশনের গয়না, তিনটি ব্যাগ, তিনজন যাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ডাকাতিতে ব্যবহৃত দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আলমগীরকে সাত দিনের ও রাজিবকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। আলমগীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ডাকাতিকালে ধর্ষণের ঘটনার কোনো তথ্য এখনো তাঁদের কাছে আসেনি। তবে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। তারপরও কোনো তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ইউনিক রোড রয়েলসের আমরি ট্রাভেলস নামে বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে ৩০–৩৫ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে যাত্রীবেশী ৮–৯ জন ডাকাত অস্ত্রের মুখে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে যাত্রীদের টাকাপয়সা, মালামাল নিয়ে নেয়। এ সময় তারা নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানিও করে। ঘটনার তিন দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে মির্জাপুর থানায় ওমর আলী নামের এক যাত্রী বাদী হয়ে মামলা করেন।