বাসের অপেক্ষায় মানুষ
ছবি: জুয়েল শীল

চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন এলাকা থেকে বহদ্দারহাট মোড়ের দূরত্ব প্রায় চার কিলোমিটার। ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে এ পথের ভাড়া সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। তবে আজ শনিবার দুপুরে খুচরা ব্যবসায়ী নুরে আলমকে যেতে হয়েছে ১৬০ টাকায়। বহদ্দারহাট মোড়ে দাঁড়িয়ে নুরে আলম প্রথম আলোকে বলেন, সড়কে গণপরিবহন কম। একটা-দুইটা করে বাস চলাচল করছে। যাত্রীও বেশি। বাধ্য হয়ে তাঁকে মোটরসাইকেলে উঠতে হয়েছে। ভাড়াও দিতে হয়েছে বেশি।

মোটরবাইকচালক মো. মোর্শেদ বলেন, তাঁর গাড়ি অকটেনে চলে। সরকার গতকাল শুক্রবার রাতে প্রতি লিটার অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করেছে। একলাফে এত টাকা বাড়ানোর ধকল অনেক মোটরসাইকেলচালক নিতে পারছেন না। আবার যাত্রীরাও বেশি ভাড়া দিতে চাইছেন না।

এর আগে গতকাল রাতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কথা জানানো হয়। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়। গতকাল রাত ১২টার পর থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হয়েছে।

মোটরসাইকেলচালকদের দাবি, জ্বালানির দাম যেভাবে বেড়েছে, আয় সেভাবে বাড়েনি। বাড়তি ভাড়া বললেই যাত্রীরা হাঁটা দিচ্ছেন। এ কারণে আয়ও কমে গেছে।

মো. কামরুল হাসান নামের এক মোটরসাইকেলচালক বলেন, তিনি সকাল ১০টায় রাস্তায় বের হয়েছেন। আয় হয়েছে ৪০০ টাকা। যাত্রীদের কাছে বাড়তি ভাড়া চাওয়ায় তাঁরা যাচ্ছেন না।

যানবাহন কম, যাত্রী-ভাড়া দুটোই বেশি

জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই চট্টগ্রামের রাস্তায় গণপরিবহন কমে গেছে। কিছু বাস চলাচল করলেও ভাড়া নিচ্ছে বেশি। মোটরসাইকেলের পাশাপাশি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও বাসে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।
মুরাদপুর থেকে নিউমার্কেট মোড়ের দূরত্ব প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার। এ পথে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া সর্বোচ্চ ১২০ টাকা। আজ চাওয়া হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। মোহাম্মদ জহির নামের এক অটোরিকশাচালক বলেন, চাল, ডাল, তেলসহ সবকিছুর দামই বাড়তি। তাই গাড়িভাড়াও বাড়তি রাখতে হচ্ছে।
এদিকে আনুষ্ঠানিক কোনো পরিবহন ধর্মঘটের ডাক না দিলেও চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্থানে বাস চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছেন পরিবহনশ্রমিকেরা। সকালে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।

সকাল থেকে নগরের ইপিজেড এলাকা, টাইগারপাস, এ কে খান মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চলাচলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ কারণে সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা কমে যায়। বেলা গড়াতেই ১০ নম্বর বাস চলাচল শুরু হলেও ভাড়া নিয়েছে বেশি।