নির্যাতন–হয়রানির অভিযোগ শ্রীপুরের উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
নিজেদের জমিতে সীমানাদেয়াল নির্মাণে বাধা দেওয়া, নির্যাতন, হয়রানি ও হামলার অভিযোগ তুলে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম প্রধানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে একটি পরিবার। আজ রোববার দুপুরে উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের গোসিংগা বাজারের পাশে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় আব্দুল মোতালেব খানের ছেলে শরিফ হোসেন ও শাকিব খান। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শরিফ হোসেন। একটি ব্যানারে লেখা ছিল ‘শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্যাতন ও হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন’।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শরিফ ও শাকিবরা নিজেদের জমিতে সীমানাদেয়াল নির্মাণ করতে যান। এ সময় লাঠিসোঁটা ও দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান প্রতিবেশী মম আক্তার, মোছা. তাহমিনা, সাদেক ফকির, আবু সাইদসহ অর্ধশতাধিক লোক। ভেঙে দেওয়া হয় নির্মাণাধীন সীমানাদেয়াল। এই হামলার পেছনে উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলমের প্রত্যক্ষ মদদ আছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারটির। হামলাকারীরা উপজেলা চেয়ারম্যানের নিকটাত্মীয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকতে পারে না। সেখানে আমার কিছু না। সারা শ্রীপুরের মানুষ জানে আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করি। আমার অনুরোধ সত্যিকার বিষয়টি আপনারা বের করেন, মানুষ খুশি হবে। উপজেলা নির্বাচনের আগে আমাকে অহেতুক বিতর্কিত করতেই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’
সীমানা দেওয়াল ভাঙা ও হামলায় যাঁদের নাম বলা হয়েছে তাঁদের একজন আবু সাঈদ অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের জমি জোরপূর্বত শরিফ হোসেন ও শাকিল খান দখল করে রেখেছেন। এসব বিষয় নিয়ে মামলা চলমান আছে। আইনগত কার্যক্রম চলছে। আমরা কোনো হামলা করিনি।’
তবে শরিফ ও শাকিবের অভিযোগ, এর আগেও তাঁদের বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলমের মদদে মিথ্যা মামলা করেছে প্রতিপক্ষ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত উপজেলা নির্বাচনে শামসুল আলমের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুল জলিলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে কাজ করেছিলেন শরিফ ও শাকিল। ওই নির্বাচনে শামসুল আলম বিজয়ী হন। তখন থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান তাঁদের প্রতি শত্রুতা করে আসছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওই দুই ভাই জানান, বাধ্য হয়ে তাঁরা বিদেশে চলে যান। এ সময় শামসুল আলমের ইন্ধনে তাঁদের কয়েক বিঘা জমির কলাগাছ কেটে ফেলা হয় এবং সীমানাদেয়াল ভেঙে ফেলা হয়। বাড়ির গ্যারেজে রাখা প্রাইভেট কারেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে শরিফ ও শাকিবের বাবা আব্দুল মোতালেব খানকেও জেল খাটানো হয় বলে তাঁদের অভিযোগ। এসব হয়রানির শিকার হয়ে তাঁদের মা–বাবা দুজনের স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে শয্যাশায়ী বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।