অতিরিক্ত তাপে বেঁকে যেতে পারে রেললাইন, ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশ

ট্রেন
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

দিন দিন তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। তীব্র তাপমাত্রার কারণে বেঁকে যেতে পারে রেললাইন। ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা এড়াতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেলপথের বিভিন্ন অংশে গতি কমিয়ে সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শনিবার রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশে রেললাইনের পাশে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি পাওয়া গেছে।

তাপমাত্রার তীব্রতার কারণে এ রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশে সব আন্তনগর ও লোকাল ট্রেনকে সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার গতিতে চালাতে লোকোমাস্টারদের নির্দেশনা দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আর মালবাহী ট্রেনগুলোকে ৩০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সব আন্তনগর ট্রেন ৪০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করছে। প্রতিদিন বেলা ১১ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত লোকোমাস্টাররা এ নির্দেশনা মেনে ট্রেন চালাচ্ছেন। রেলপথের বিভিন্ন অংশে রেললাইনের পাশে রেলওয়ের লোকজন পানির বালতি নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন। যেখানে লাইন বাঁকা হওয়ার শঙ্কা আছে, সেখানে পানি দিয়ে ঠান্ডা করতে হচ্ছে।

মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে আশুগঞ্জ ৩১ কিলোমিটার (আপ-ডাউন ৬২ কিলোমিটার) এবং ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রেলপথের আখাউড়া থেকে বিজয়নগরের মুকুন্দপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার (আপ-ডাউন ২৮ কিলোমিটার) অংশ তাঁদের আওতায় পড়েছে। তিনি বলেন, আজ রেললাইনের পাশে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে।

আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ পরিবেশের তাপমাত্রার চেয়ে রেললাইনে তাপমাত্রার পরিমাণ সব সময় বেশি থাকে। অতিরিক্ত তাপমাত্রায় রেললাইনের পাত গলে দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দেয়। এ জন্য গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। অতিরিক্ত তাপমাত্রা থাকায় ১১ এপ্রিল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেলপথে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ রেলপথে স্বাভাবিক সময়ে ৭২ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে ট্রেন চলাচল করে। তবে তাপমাত্রার অবস্থার ওপর ভিত্তি করে ১১ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচল করতে হবে। যত দিন তাপমাত্রা বেশি থাকবে, তত দিন এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে। গতকাল শুক্রবার রেললাইনের পাশে তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ছিল।

প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল ১০টার পর আমরা তাপমাত্রা পরিমাপ করছি। তাপমাত্রা যত দিন বেশি থাকবে, আমাদের এ কাজ অব্যাহত থাকবে। যখনই তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করবে, ট্রেনের গতি কমানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হবে। আমাদের লোকজন রেললাইনের পাশে প্যাট্রোলিংয়ে আছেন। ২৪ জন কাজ করছেন।