নেত্রকোনায় প্রধান শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় স্ত্রী কারাগারে
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে শিক্ষক চন্দন কুমার দাস (৫৭) হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী শেলি সরকারকে (৪৬) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার চন্দনের বড় বোন ফুলন রানী দাস বাদী হয়ে ওই ঘটনায় হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় শেলিকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, হত্যা মামলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে আসামি শেলি সরকারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে ময়মনসিংহ কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চন্দন কুমার। তিনি উপজেলার দুর্গাপুর পৌর শহরের আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও বারমারী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
মামলার এজাহার, পারিবারিক ও স্থানীয় কয়েক বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, চন্দন কুমার দাস ব্যক্তিজীবনে নিঃসন্তান ছিলেন। তাঁর ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর মেয়েকে তিনি লালন–পালন করতেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। ৯ অক্টোবর রাতে শেলি ক্ষিপ্ত হয়ে চন্দনকে বেধড়ক মারধর করেন এবং পরে তাঁকে বিষজাতীয় কোনো দ্রব্য পান করান। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরদিন সকালে চন্দনকে স্থানীয় লোকজন ও তাঁর সহকর্মীরা উদ্ধার করে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
সূত্রগুলো আরও জানায়, চন্দনের হাত, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। সেখান থেকে সর্বশেষ তাঁকে ময়মনসিংহ কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে পাঁচ দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি গত মঙ্গলবার রাতে মারা যান। পরদিন রাতে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দুর্গাপুর মহাশ্মশানে দাহ করা হয়। এ ঘটনার পর চন্দনের বড় বোন ফুলন রানী দাস বাদী হয়ে শেলিকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এদিকে শিক্ষক হত্যার প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে বারমারী উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানানো হয়।