সাত্তারের পক্ষে কাজ করলে দল থেকে বহিষ্কার: রুমিন ফারহানা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। রোববার দুপুরে উপজেলার রাজমনি হোটেলে
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির দলছুট নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঞার পক্ষে কাজ করলে তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সহ–আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। আজ রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় এক সেমিনারে এ কথা বলেন। উপজেলার হোটেল রাজমণিতে এ সেমিনারের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি।

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এবার দল অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছে। কেউ যদি আবদুস সাত্তারের পক্ষে কাজ করেন, তাঁদের বহিষ্কার করা হবে। তাঁদের এই দলে রাখার কথা আর হবে না। দলের হায়েস্ট কমান্ড থেকে এই নির্দেশনা এসেছে। এখানে একজন, দুজন মীর জাফরি করল কি করল না, এটা কোনো বিষয় না। আমরা কেউ ভোটকেন্দ্রে যাব না।’

আরও পড়ুন

রুমিন ফারহানা আরও বলেন, ‘তিনি (সাত্তার) এমন একটা কাজ করবেন, আপনারা যেমন কল্পনা করেন নাই, দলও কল্পনা করে নাই। অনেকের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক থাকতে পারে। অনেকের সঙ্গে পারিবারিক বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকতে পারে। সেই সম্পর্কের রেশ ধরে নির্বাচনে আমরা যেন কেউ উকিল আবদুস সাত্তারের পক্ষে কোনো কাজ না করি। কেউ যেন একটা ভোট না চাই। কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে না যাই।’

উকিল আবদুস সাত্তারের উদ্দেশে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘উনি (সাত্তার) ওনার মতো নির্বাচন করুক। তাঁকে পাস করিয়ে আনা হবে। এখানে তো আর ভোট হচ্ছে না। আপনারা সেটা বুঝতে পারতেছেন। আওয়ামী লীগের যাঁরা প্রার্থী ছিলেন, তাঁরা বসে পড়ছেন। তাঁরা আর নির্বাচন করবেন না। একটা কলাগাছ দাঁড়ালেও ওনার সঙ্গে পাস করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাঁর তো কোনো ভোটই নাই। বিএনপির ভোটও নাই, আওয়ামী লীগের ভোটও নাই। যেই দাঁড়াবে, সেই পাস করবে। এই ‍ঝুঁকিটা আওয়ামী লীগ নিতে চাচ্ছে না। সেই কারণে আওয়ামী লীগের যাঁরা প্রার্থী ছিলেন, তাঁরা বসে পড়েছেন। তাঁকে ডিক্লেয়ার দিয়ে পাস করিয়ে দেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন
সাত্তার ভূঞা

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘যেটা উনি করেছেন, সেটা ওনার শেষ জীবনের কর্মফল। ওনারটা উনি ভোগ করবেন। এর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নাই। আমাদের মধ্যে কোনো আলোচনাও নাই। আমরা যদি ওয়ার্ড পর্যায়ে কাজ করি, আগামী নির্বাচন মোকাবিলা করা সম্ভব।’

সরকারের উদ্দেশে রুমিন ফারহানা বলেন, ২০১৪ সালে তারা (আওয়ামী লীগ) বিনা ভোটে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ বানিয়ে বসে গেছে। ২০১৮ সালের তারা মধ্যরাতে নির্বাচন করেছে। তাদের সাহস হয়নি দিনের আলোতে ভোট করার। ২০২৩-এর শেষে বা ২০২৪ সালে আরেকটা নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন কিন্তু ২০১৪ ও ২০১৮-এর মতো হবে না।

আরও পড়ুন

বিএনপির সহ–আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। তাঁদের সঙ্গে আমাদের বসতে হয়। আন্তর্জাতিকভাবে শক্ত চাপ আছে সরকারের ওপর। আর কোনো নির্বাচন এভাবে বিনা ভোটে, রাতের ভোটে করা যাবে না। আগামী নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের ওপর দেশের এক পার্সেন্ট জনগণেরও সমর্থন নেই। কিন্তু বিএনপির পাশে আছে ১৬ কোটি মানুষ। আমরা অনেক কিছু হারিয়েছি। হারানোর আর কিছু নাই। এখন ঘুরে দাঁড়ানোর সময়। আগামী নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে।’

আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ শাজাহান সিরাজের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন, উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব নাসির মুন্সি প্রমুখ বক্তব্য দেন। সেমিনারে উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন