সংযোগ না দিয়েই ১৮ হাজার টাকার পানির বিল

খুলনায় ওয়াসার কর্মকান্ড নিয়ে গণশুনানিতে অংশ নেন গ্রাহকেরা। বুধবার খুলনা ওয়াসার সম্মেলনকক্ষেছবি: প্রথম আলো

খুলনা নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুর রহমান। বড় বোনের বাড়িতে ওয়াসার পানির সংযোগ নিতে আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে পানির সংযোগ দেওয়া হয়নি। দীর্ঘ ৯ বছর পর তাঁর নামে ১৮ হাজার টাকার একটি বিল পাঠানো হয়েছে। এতে হতবাক হয়েছেন আবদুর রহমান ও তাঁর বোন।

হঠাৎ পানির এমন ভুতুড়ে বিল নিয়ে ওয়াসার গণশুনানিতে হাজির হয়ে কারণ জানতে চান আবদুর রহমান। তাঁর মতো এমন অনেক অভিযোগ নিয়ে শুনানিতে অংশ নেন খুলনা ওয়াসার সেবাগ্রহীতারা। বুধবার ওয়াসার সম্মেলনকক্ষে যৌথভাবে এ গণশুনানির আয়োজন করে খুলনা ওয়াসা ও ওয়েভ ফাউন্ডেশন। শুনানিতে খুলনা ওয়াসার পানিতে গন্ধ, ময়লা, পানের অযোগ্যসহ নানা দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করেন গ্রাহকেরা।

আয়োজকেরা জানান, সুপেয় পানি ব্যবস্থাপনাকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিনিধিত্বমূলক করতে এ গণশুনানির আয়োজন করা হয়। একটি প্রকল্পের অধীন খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকায় ওয়াসার গ্রাহকসেবার মানোন্নয়নে একটি সামাজিক নিরীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশন এলাকায় পরিচালিত গণশুনানিতে ফলাফল উপস্থাপন করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা আহমেদ বোরহান। এতে অন্যদের মধ্যে খুলনা ওয়াসার সচিব প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল ইসলাম, বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক খাদিমুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। শুনানিটি সঞ্চালনা করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সুশাসন, অধিকার ও ন্যায্যতা কর্মসূচির উপপরিচালক কানিজ ফাতেমা।

সামাজিক নিরীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে বলা হয়, খুলনা ওয়াসার গ্রাহক সন্তুষ্টি ছিল মাত্র ৪৪ দশমিক ৬১ শতাংশ, সেখানে অসন্তুষ্টির মাত্রা ছিল ৫৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ৫৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ ওয়াসার কর্মীকে সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা অর্থ দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ ওয়াসার সেবা–সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ বা মতামত জানানোর কোনো মাধ্যম আছে কি না, তা জানেন না। ওয়াসার প্রতি অসন্তুষ্টির কারণ হিসেবে ওয়াসার সংযোগ পেতে দেরি বা হয়রানি, পানের অযোগ্য বা ময়লা পানি, পানিতে ব্লিচিং পাউডারের গন্ধ, লবণাক্ত, বিল নিয়মিত দেওয়া হয় না, বিল বেশি বা ভুয়া বিলের অভিযোগ উঠে আসে।

নিরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী গ্রাহকেরা ওয়াসার কার্যক্রমকে জনমুখী করতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়, প্রচারণা ও জনবল বাড়ানো, সেবা সহজলভ্য করা, পানি ও পয়োনিষ্কাশন কার্যক্রম সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া, সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনাসহ জনগণের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।