ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে শুরু হলো ‘গো গ্রিন, গো বিয়ন্ড’ ক্যাম্পেইন

ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গণে ‘গো গ্রিন, গো বিয়ন্ড’ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয় আজছবি: টোয়াবের সৌজন্যে

বাংলাদেশে ভ্রমণকে আরও পরিবেশবান্ধব ও দায়িত্বশীল করার লক্ষ্য নিয়ে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) ও মিশন গ্রিন বাংলাদেশ (এমজিবি) যৌথভাবে ‘গো গ্রিন, গো বিয়ন্ড’ নামের একটি প্রচারাভিযান শুরু করেছে।

আজ মঙ্গলবার ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গণে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের (টোয়াস) সহযোগিতায় ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন হয়। এতে টোয়াবের পরিচালক, টোয়াসের যুগ্ম সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম এবং উভয় সংগঠনের সাধারণ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্যোগের অংশ হিসেবে দেশের প্রতিটি বিভাগে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আয়োজকদের দাবি, এ কার্যক্রম ভ্রমণকারী ও স্থানীয় জনগণকে সবুজ পর্যটনের চর্চায় উদ্বুদ্ধ করবে।

এ উদ্যোগ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভ্রমণ ও পর্যটন মেলা বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার (বিটিটিএফ) ২০২৫-এর অংশ। মেলাটি আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে (বিসিএফসিসি) অনুষ্ঠিত হবে।

আয়োজক সূত্র জানায়, ২০টিরও বেশি দেশের অংশগ্রহণ, আড়াই শতাধিক প্রদর্শক, দুই হাজারের বেশি ব্যবসায়িক প্রতিনিধি এবং প্রায় ৫০ হাজার দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে এবারের মেলাটি হবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আয়োজন।

মেলায় চারটি বিশেষায়িত হলে ইনবাউন্ড, আউটবাউন্ড, মেডিকেল, দেশীয় ও অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম তুলে ধরা হবে। আয়োজনটিতে সহযোগিতা করছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশ ও এফবিসিসিআই।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে টোয়াব সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, ‘পর্যটন ও টেকসই উন্নয়নকে একসঙ্গে চলতে হবে। গো গ্রিন, গো বিয়ন্ড উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা শক্ত বার্তা দিতে চাই যে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প প্রকৃতি সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে ভ্রমণকে এগিয়ে নিতে চায়। এ উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট পক্ষ ও ভ্রমণকারীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করবে এবং একটি সবুজ ও দায়িত্বশীল পর্যটন খাত গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।’

মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি বলেন, ‘দায়িত্বশীল পর্যটন আর বিকল্প নয়—এটি এখন অপরিহার্য। দেশের অন্যতম বৃহৎ পর্যটন মেলার সঙ্গে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমকে একত্র করে আমরা দেখাতে চাই যে উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ একসঙ্গে চলতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, এই ক্যাম্পেইন সমাজ ও ভ্রমণকারীদের একটি সবুজ বাংলাদেশ গড়ার কাজে অনুপ্রাণিত করবে।’

টোয়াবের পরিচালক (ট্রেড অ্যান্ড ফেয়ার) মো. তাসলিম আমিন (শোভন) বলেন, ‘বাংলাদেশের পর্যটনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার ওপর। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা দায়িত্বশীল পর্যটনের মানদণ্ড স্থাপন করছি, যা আমাদের প্রাকৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ করবে এবং অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করবে। বিটিটিএফ ২০২৫ শুধু গন্তব্য প্রদর্শন করবে না, বরং দেখাবে কীভাবে এই শিল্প একটি সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও আরও স্থিতিশীল বাংলাদেশ গঠনে নেতৃত্ব দিতে পারে।’
বিটিটিএফ ২০২৫ শুরুর আগপর্যন্ত দেশজুড়ে এ ক্যাম্পেইন চলবে। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, মেলাতেও পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপ নেওয়া হবে—এর মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য কমানো থেকে শুরু করে টেকসই ভ্রমণ সমাধানকে উৎসাহিত করা হবে।

মেলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে https://fair. toab. services/book-your-space সাইটে ভিজিট করতে বলেছেন আয়োজকেরা।