বালিয়াডাঙ্গীতে এক রাতে ১২ মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর

ভাঙচুর করা মন্দিরের প্রতিমা। আজ রোববার ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর ধনতলার সিন্দুরপিণ্ডি এলাকা
ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় এক রাতে ১২টি মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের আটটি, পাড়িয়া ইউনিয়নের তিনটি ও চাড়োল ইউনিয়নের একটি মন্দিরের ওই ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। আজ রোববার সকালে স্থানীয় লোকজন মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভাঙচুরের ঘটনাটি দেখতে পান।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ঠাকুরগাঁও জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কুমার গুপ্ত।

প্রবীর কুমার গুপ্ত জানান, গতকাল দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে ধনতলা ইউনিয়নের সিন্দুরপিণ্ডি এলাকার আটটি, পাড়িয়া ইউনিয়নের কলেজপাড়া এলাকার তিনটি ও চাড়োল ইউনিয়নের সাহবাজপুর নাথপাড়া এলাকার একটি মন্দিরের ওই ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। বেশির ভাগ প্রতিমাই রাস্তার পাশে স্থাপিত মন্দিরের। সেসব মন্দিরে কালী, সরস্বতী, লক্ষ্মী ও মনসার প্রতিমা ছিল। সেসব প্রতিমার মাথা, হাত, পাসহ বিভিন্ন অংশ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে স্থানীয় লোকজন প্রতিমাগুলো ভাঙা অবস্থায় পেয়ে প্রশাসন ও পুলিশকে খবর দেন। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতেই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

ধনতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সমর চ্যাটার্জী বলেন, এই এলাকায় এর আগে এ ধরনের ঘটনার নজির নেই। এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে মুসলিমদের কোনো বিরোধ নেই। প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় কারা সম্পৃক্ত থাকতে পারে, তার কিছুই আন্দাজ করা যাচ্ছে না।

খবর পেয়ে বেলা একটার দিকে প্রতিমা ভাঙচুরের স্থানগুলো পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান ও ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। পুলিশ এ ঘটনায় কাজ করছে। কোনো গোষ্ঠী এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশে এসব মূর্তি ভাঙচুর করেছে কি না, এসব বিষয় মাথায় নিয়ে ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। আশা করছি, শিগগিরই দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা যাবে।

জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, শান্তি ও সম্প্রীতির জনপদকে যারা অশান্ত করতে অপতৎপরতা চালাচ্ছে, তাদের শিগগিরই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।